উড়ে গেছে চিল
সাদ জগলুল আববাস
হাঁসের ছানার মতো নরম প্রাতঃরোদ পড়ে থাকা আড়াআড়ি কিছুক্ষণ, এরকম আমার একখানা
গাছবাঁধানো ঘাট ছিলো
পুকুরের ছাতে মেঘ আর চাঁদ আর তারার ত্রিমুখী প্রণয়ের দিনরাতগুলো ছিলো
হাঁসের পিছু পিছু বৃষ্টির চই চই ডাক —
ছিলো মায়ের আঁচলের মতো একখানা দোতলা ঘর—দশ বাই দশ সেই রুম
আর সন্ধ্যা রাঙানো একখানা বিশাল মাতোয়াল ব্যালকনি
আর ছিলো শহরতলীর ডানমুখী নরম রাস্তায় দাঁড়ানো গাছের সারি!
মফস্বলি রাতবাতির ম্লান আলোয়
অইসব গাছের গোড়ায় অন্ধকার যেন
আরও ঘন হতো
এইসব আমারই ছিলো প্রেমিকার চিঠির মতন
সেই শহরতলির তলা ছুটে গেছে বহুদিন—
সব গিলে খেয়েছে কুৎসিত কুমীরের দল।
পুকুর নেই, সাথে ঘাট গেছে, হাঁস গেছে
চারিদিকে থৈ থৈ ইমারত, ঐ দোজখের খিলান দিনরাত আকাশটা চেটেপুটে খায়
চিলেরাও ভয়ে গেছে আরও দূরে উড়ে
আঁধার নাইয়র গেছে সেই কোন ঠাকুমার কালে— ফিরে আসেনি
বিশাল রাস্তায় নোঙর ফেলা সূর্যতাপিত রাতবাতি—অসংখ্য সূর্যই যেন;
এ শহরে ওরা রাতেও রোদ চশমা পরে
আধুনিকতার শীৎকারে বুকের ভিতর অবিরল নৈঃশব্দ ভাঙ্গে,
তাও ভুলে গেছি কবে হতে শুরু ছিলো —কেউ কি জানো?
শুধু আমার অতিপ্রাকৃত সেই ধূসর দোতলা বাড়ি দশ বাই দশ ঘর;
ওইসব দিনে চিলের ডানার সুখরোদে চুনকাম করা টলটলে বারান্দায় আমি আছি কোনমতে জিজীবিষা নিয়ে।
আমার সব রাত আর দিনগুলো জ্বরে কাঁপে শঙ্খমুখের চোয়ালের ভিতর।
তারিখঃ অক্টোবর ৩, ২০২৩
সুন্দর কবিতা৷ অনেক অনেক শুভকামনা।