নীল পদ্ম
বাণী বসু
শিবির গেড়েছো এই ভয়াল জাঙালে
কণ্টকে কণ্টক গাড়ি’
নিঙাড়ি নিঙাড়ি এই বল্কলশাড়ি
যেতে হবে দূর নদীকূলে
একা একা, কত দূর জানত জানত নহি জানো না জানো না
কানাতটা একটু তুলে দেখেছে এ দীনা
অদ্ভুত…দেবারতি…আকাশগঙ্গায়
নীলপদ্ম নীলোৎপল ভেসে ভেসে আসে কোথা থেকে, কোথা চলে যায়
এত জল…ছায়াপথে এত পদ্ম…পদ্মের সাঁতার আমি দেখিনি কখনো
দেখিনি নীলের অফুরন্ত জোয়ার,জানো জানো বৃকোদর!
সিংহকটি অসমসাহসী বীর প্রেমিক আমার,
অজস্র এ পদ্মের পাথার
থেকে পদ্ম এনে দেবে? কতিপয়?
যুগ যায়, যেতেছে সময়…
বৎসর বৎসর ঘোরে, আবাঁধা এ মত্ত কেশভার,
ঘনঘোর নীলাব্জ কেশে, নীল পদ্ম গাড়িব দেদার
বলিনি কখনো কাউকে, আজও বলবো না
আমার সে দেহগন্ধ? যে ছিল যোজনগন্ধা ক্রমে হয়ে আসছে গন্ধক্ষীণা।
যখন কেউ না কেউ চুলের গভীরে মুখ ডোবাও
ভয় করে, ভয় করে যদি টের পাও!
পদ্ম নিয়ে এসো বন্ধু
পদ্ম এনে দাও।
বুরুডির লেকে
বানী বসু
বুরুডির লেকে হাওয়া বয়।
নীল চোখ আকাশের
কাচনীল পড়ে থাকে জলে
যেন সে নিবিদ কথা কয়।
বহু দূরে দূরে
নির্জন পাহাড় বন, সবুজ গাঢ় দেয়াল
ভেদ করে দমকে দমকে ভেসে আসে
দূরধ্বনি!
শিশুদের, বালকবালিকাদের আবছায়া কলরোল…
কারা খেলে?
মানুষের নয় যেন…
গাছের, ঘাসপাতার, শুকনো মহুয়া ফলের শিশু, ঘোরালো আলোর আড়ে রোদ্দুরের
নক্ষত্র শিশুরা নিরজনে
একলা টাঁড়বুরু পেয়ে
টুপটাপ দৌড়ে নেমে আসে
লুকোচুরি খেলে নেয় ফাঁকা এই উপত্যকায়।
মিহিন মিহিন হাওয়া বয়।
শিউরোয় লেক-জল
গজলের ছুট তান হালকা ছুটে যায়,
হাত রাখে…প্রেম রাখে…গান রাখে নীল জলে
হাওয়া বয়
বুরুডির লেকে
দূরধ্বনিময়…
তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১