মধ্যবিত্ত
দীপায়ন ভট্টাচার্য
ট্রাফিকে আটকানো গাড়ির কাঁচে
টোকা মেরে পয়সা চাওয়া
বাচ্চা মেয়েটিকে যখন অগ্রাহ্য করেন
আর বাড়ি ফিরে সাম্প্রতিক খবর শুনে
দুশ্চিন্তা করেন ভবিষ্যৎ ভেবে,
রাস্তায় পড়ে থাকা আহত রক্তাক্ত দেহ দেখে
ব্যস্ততার নামে সেখান থেকে সরে যান
আর ট্রেনে বাসে বৈঠকখানায়
প্রশাসন ও পরিকাঠামোর শাপশাপান্ত করেন,
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় দুর্বৃত্তের হাতে দায়িত্ব দিয়ে
সন্ত্রাসের কারণ খুঁজতে উদগ্রীব হয়ে ওঠেন,
ধর্ম ও দমনের বিষবাষ্পে বাতাস যখন ভারী
কিন্তু আপনি নিরুত্তাপ –
আজ অবধি ছাঁকা বাতাসটুকু
নিতে পারছেন বলে,
যখন কবিতার ব্যঙ্গটুকু না বুঝে হেসে ওঠেন
পর্দায় অসহায়কে কাঁদতে দেখে
আমোদে হাততালি দেন
দেশকে গরীব বললে উত্তেজিত হন অথচ
কৃষকের আত্মহত্যায় অবিচলিত থাকতে পারেন,
ফাইলের নীচে টাকা গুঁজে দিয়ে বেরিয়ে
দুর্নীতি নিয়ে বুক চাপড়ান,
যখন নিজের সন্তানকে ‘রাজনৈতিক’ হতে বাধা দেন,
সমুদ্র এখনও বেশ দূরে, ঝড় আরও –
এই ভরসায়
চাদর টেনে ওপাশ ফিরে শোন,
তখন আপনি নাও দেখতে পারেন,
বুকে-পিঠে দুরারোগ্য ক্ষত নিয়ে
সত্তর বছরের দেশ-মানুষ
ন্যুব্জ হয়ে দাঁড়িয়ে,
আপনার দিকে আঙুল তুলে
সে বিবর্ণ হাসি হাসছে –
অস্ফুটে বলছে,
আপনি মধ্যবিত্ত নন, মধ্যমনা!
আপনি আদিজরাগ্রস্ত, অপ্রাসঙ্গিক!!
তারিখঃ জানুয়ারি ১৬, ২০২১
Subscribe
Login
0 Comments
Oldest