শ্মশানতত্ত্ব
অর্ঘ্য রায় চৌধুরী
কার কাছে প্রত্যাশা করি?
কে চিনেছে রক্তের স্রোতে দুলে ওঠে
চতুর্দশ ভুবন আর সপ্ত পাতাল?
পৃথিবীর শেষ সীমানায়
আলোকিত আপেল বাগান কে দেখেছে?
কে দেখেছে করতলে মৃত্যুর ডানা মুড়ে বসা?
কার কাছে প্রত্যাশা করি?
কে দেখেছে অক্ষর আসে ঝাঁকে ঝাঁকে?
দিগন্ত জুড়ে নেমে আসে অক্ষৌহীনি নারায়ণী সেনা?
কে শুনেছে শঙ্খ বেজে ওঠে?
বাসুকির সহস্র ফনার মতো দুলে ওঠে রাত
কে দেখেছে শব সাধনের সেই আগুন জোনাকি?
সিনয় পাহাড়ে সেই মৌমাছি পাড়া?
গালিয়াদ মরুর বুকে সৃষ্টির বীজ, সোনার হরিণ
খেলা করে
কে দেখেছে বোররাখ?
কে শুনেছে অনিন্দ্যকান্তি সেই পুরুষের অনন্য আজান?
কে শুনেছে শরাহত মারিচের ডাক?
রজত আঙুল জুড়ে নেমে এলে চাঁদ
সেইসব নেশায় নেশায় বহুবার বহুবার
দিয়েছি আগুনে ঝাঁপ, বহুবার ঘরছাড়া আমি
হে প্রণম্য বিশ্বজগৎ, তোমার কাছেই
উড়ে গেছি প্রথম জন্মকালে উড়ন্ত গড়ুরের মতো
দেখেছি অমৃত রাখা, জোড়া কালসাপ
যজ্ঞের আগুন থেকে উঠে এসেছিল সেই সূর্যের রথ
দেখেছি ক্রুসেডের রাতে শয়তান হেসে ওঠে তাঁবুর আড়ালে, কে ছুঁয়েছে নটিনীতত্ত্ব থেকে উঠে আসা মহামায়ার আসল শরীর?
কার কাছে প্রত্যাশা করি?
কে দেখেছে কার্নিশে বিকেলের ডানা
চলে যেতে যেতে ফেলে যায় সোনার পালক?
কে জেনেছে অক্ষর নয়
আসলে রক্ত পড়ে, রক্ত পড়ে,
রক্ত পড়ে ভিজে যায় সৌপ্তিক ঘন হয়ে এলে
শরশয্যার মতো ভিতর শরীর?
তারিখঃ এপ্রিল ১১, ২০২২
খুব সুন্দর কবিতা। প্রকাশের তীব্রতা অনুভব করার মতো।