সংস্রব
সৌরীণ মুখার্জী
শরীরের ভেতর একটা গাছ বেড়ে উঠছে ক্রমশ। দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি ঠায়- চুপচাপ, সঙ্গীহীন। যে আলোটুকু পথ ভুলে ছুঁয়ে যায়, ঠুকরে খাই তাকে। হাওয়া দিলে উড়ে যেতে পারি বহুদূর। ফিরে এলে, আসলে কোথাও যাওয়া হয়নি। এ আবর্তে আমিই অজঙ্গম।
পাহাড়ের মতো দেহেও শীত বাড়ছে। ম্যাপলের পাতাগুলোয় বহুদিন কবিতা লেখা হয়নি। এমন অদ্ভুত কালো গুরাস এ’ যাবৎকালে এই বুঝি প্রথম! যে নেপালি গানে ভুলে ছিলাম এতদিন, সুরটা মনে পড়ছে না আর। কথাগুলোও জড়িয়ে গেছে। স্মৃতিঘরে মস জমছে। ফায়ারপ্লেসের সময়ও ফুরিয়ে এলো। এখন অপেক্ষা বরফপাতের। জামার ভেতর প্রহর গুনছে অজস্র ফ্লেক্স।
একটা নদী বয়ে যাচ্ছে খুব কাছ দিয়ে। সমুদ্রে মেশার বহুযুগ আগে থেকেই ও নোনতা। বিরল স্পর্শ-সান্নিধ্যের ভোরে ভাটিয়ালী শোনা যায়। বহুদূরের কোনো দ্বীপে আত্মঘাতী যুবকের দেহ ভেসে ওঠে বালিতে। ওর কানেও পৌঁছে যায় সুর। চোখ মেললে ফুলকির মতো আলো। এক অস্পষ্ট মেয়েলি মুখ, আদিবাসী উল্কি, চুলের খাঁজে নীল কাঠগোলাপ। বেলা বাড়লে খবরের পাতায় মাঝির নিখোঁজ সংবাদ।
“Forever comes to an end.”
মেঘলা দুপুর, এক্সট্রা ক্লাসের ছুতোয় তোমায় দেখবো। যেভাবে দেখেছি এতদিন, সেভাবে নয়। আরও কাছ থেকে, এক ঝলক, দু’ ঝলক… ‘আবহমান’। হাতের তালুতে কথাদের জমিয়েছি, এলোমেলো হয়ে যাচ্ছি আবার। বৃষ্টি আসার আগেই তুমি এলে। পরিচয় করাচ্ছো তোমার প্রেমিককে। এত আলোয় আমার চোখদুটো বারবার ঝলসে উঠছে…
ফেব্রুয়ারী চৌদ্দ, সে’ বছর একটানা সাতদিন বৃষ্টি হলো।
তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২