বুজরুকি হ্যে
শৈবাল চক্রবর্তী
-ধ্যুস! এয় সব বুজরুকি হ্যে। ভেল্কিবাজি।
-নাহ হুজুর, উস্তাদ পারে আইজ্ঞা। লিজো চক্ষ্যে দেখা। বড় গুরুর ঠাঁই চ্যালা ছেলো কত্ত বচ্ছর। ভোজবিদ্যা, কুহকবিদ্যা, ডাকিনবিদ্যা, আরও হল গে কাকচরিত্তি, অগ্নিবিস্টি, জলঝারি…………”
-আহ! থাম দিকি। মোর চেয়্যে তুই বেশি চিনিস উয়ারে! চ্যালা আছিস থাক, তবে চুপ থাক। উকে বুইলতে দে।………… কি হ্যে সুরথ? তুমারে ন্যে এত্ত কথা, তুমি চুপ ক্যানো?
সুরথ গুণিন এতক্ষণ তার কালো ছিপের মত চেহারাটা বাঁকিয়ে উবুড় হয়ে বসে ছিল। এবার গলায় খানিক উৎকণ্ঠা নিয়ে বলে উঠলো- “হঁ, সি তো ফক্কিবাজির চক্কোর লেগ্যে আছেই।কিন্তু সেই গতবার যো বইল্যেন সুরথ বিস্টি লামা, বিস্টি লামা! সেবার কিন্তু আগাশ ফাইট্যো জল আসলো মোর ডাকে। বান্ধে দিল্যাম ম্যাঘগুলান সব তুমাদের জন্যি গো! কিছু বিদ্যে আছে…………কিছু কিছু………” সুরথ চুপ করে যায়।
-“ইঃ! একটো দিন কী সব লাচালাচি করলি, সাঁঝে দু’ফোঁটা ঝড়জল, ব্যাস হয়্যে গ্যেলো! তর বিস্টি লামানো এক্কোদিনেই খতম!”
চারপাশের ভিড়টা গুনগুন করছিলো। তারাও রতন সাহার কথার আধা সমর্থনে হ্যাঁ কিম্বা না এর মাঝখানে পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকলো। কী করা……, সাহাবাবু এম.এল.এ, মানী লোক। চাষের ক্ষেত, ফলের বাগান, ধানের গোলা, চালকল……… এলাকার লোক সব ভয়-ভক্তি করে। আজকের মানুষ নয়। অনেক বছর আগের কথা। ভেস্ট হয়ে যাওয়া জমির দখল তখন তাকে ছাড়তে হইয়েছিল।পাট্টা নিয়ে সেসব বুঝে নিল যারা, ওর মতে সব ছোটলোকগুলো। তাতেই বা কী হল। পারলো তাকে আটকে রাখতে। সেই থেকে আজ এই…… এতোগুলো বছরে তার ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি ক্রমশঃ অনেক বেড়েছে। যখন দরকার হয়েছিল, ওই ছোটলোকদের দলে নাম লিখিয়ে মিটিং, মিছিল, পার্টি ফাণ্ডে চাঁদা……… সাথেসাথে নামে বেনামে একটু একটু করে হারানো জমি উদ্ধার, নতুন নতুন ব্যবসা, তারপর সময় মতো ডিগবাজি। হাওয়া মেপে উঠতি দলে মোটা চাঁদার বিনিময়ে ভোটের টিকিট।
সে না হয় হল কিন্তু ভিড়ের লোকগুলো তো সুরথকে আজ থেকে দেখছে না। বিপদে আপদে, রোগবালাই-এ ওই তো ভরসা।যখন কাজে নামে, মন্ত্র পড়ে, ওর বালির মতো খসখসে ঝাঁকড়া চুলগুলো ওড়ে, কেমন যেন পালটে যায় মানুষটা। সেইবার মনে আছে, ঝলসানো নীল আকাশ জুড়ে তখন শুধু চিলেদের ঘুরে ঘুরে চক্কোর। শ্মশানে মড়ার ঠাঁই বসে যজ্ঞ হল একখানা বটে। বিশটা হাজার টাকা খরচ হল রতন সাহার।তার যেহেতু অনেক জমি জিরাত, চাষবাস আছে, জল চাই তার। আরও আরও জল। শ্যালো দিয়ে আর কতো টানাবে।তাতে তেল ডিজেলের খরচও হু হু করে বাড়ে। তো মাত্র একদিন, সারাদিন যজ্ঞের শেষে, সাঁঝ বেলায় আকাশ ঠেলে পাল পাল হাতির মতো মেঘ ধেয়ে এলো। ভেসে গেলো চরাচর কিন্তু সত্যিই তো, তারপর তো আর…………… অথচ সুরথ জানে কেন, কোন নিয়মের ব্যত্যয় হয়ে ছিল। গ্রামের যে মেয়ে তখন প্রথম রজঃস্বলা, তাকে যে চাই যজ্ঞে। তার রক্তে ভিজবে মাটি আবার তার পুজোও হবে। কুত্তার মতো ঘুরেও সেদিন এমন কাউকে পায়নি। কোনো ঘর মেয়ে দেবে? নাঙা বসিয়ে পুজো আর রতন সাহার মতো অনেক পুরুষের চোখ দিয়ে তাকে খেয়ে ফেলা কার সহ্য হবে?
সুরথ ঝিমানো দৃষ্টিতে চারদিকটা দেখে। তারপর কেমন গুঙিয়ে ওঠে- “মোর গুরু বলে, একখান কড়িতে মন্তর দিব্যেক, তিন ফুঁয়ে গত্তে যদি মারো তো দিব্ব সাপ বাহির হব্যেক কিন্তু ধরা দিব্যেক লাই। একটা ডবকা মেইয়্যে চাই, সাপ ধরা বন্ধনী। সেদিন তারে রাখো লাই, ম্যাঘে বন্ধনী লাগে কি কর্যে…… হঁ?”
রতন সাহা ঠোঁট চাটে। এই সুরথকে নিয়ে তার অনেকদিনের ঘর। প্রথম যেবার ইলেকশনের টিকিট পেলো, সেদিন সুরথ পছাড়ি ওর জন্য যজ্ঞ করেছিলো।– “সুরো, ওই হারামজাদা বড়ো বাড় বেড়েছে। বাণ মার উকে………সুরো, উয়ার সর্পাঘাত হোক, আজ রাত্তির যেন না কাটে!” রতন সাহার তখন চাহিদা আর বায়নাক্কার শেষ নেই। তারপর ঘুরে আবার একটা ইলেকশন এসে গেছে। -“সুরো র্যে, তোর গুরু রামা গাছ উড়াতি পারতো, উয়াতে চেপ্পে ঘুরে ঘুরে রাতের আন্ধারে লিত্য লতুন মাইয়া………খিক খিক খিক!…….তুই তার চ্যালা, মন্ত্র আউড়ে যোবতী ম্যেইয়ার ঘরে………… সে সব তো কিচ্ছুই পারিস না!” আবার এইসবের ফাঁকে ফাঁকে সুরথকে লোভ দেখাতে চায় –“বইয়েস হল্লো ঢের হে সুরো, তোর এট্টুখান ভিটে তো কব্বে ধারেকজ্জের গভভে গেইছে। মুই তো লিমিত্ত র্যে। তোরে এট্টা চালা বেন্ধে দেই, পছন্দের ম্যেইয়া এনে রাখ। চালকলের পিছে থাক না তোর সাধন ভজন লিয়ে।” সেও তো বলতে বলতে এককুড়ি বছর পার হয়ে গেলো ।পছন্দের মেয়ে মানুষ তার একটা ছিলো বটে কিন্তু তাকেও কব্জা করেছিল রতন।তাই আজও সুরথের কিছু নেই। ঘর নেই, উঠোন নেই, ঘরণী, ছানাপোনা, হাঁস-মুরগি, কিচ্ছু নেই। তবে এক ন্যালাক্ষেপা চেলা এসে জুটেছে। আজকাল ছায়ার মত লেপটে থাকে। আর এ দিকে মজা দেখো, সেইবার বৃষ্টি নামা না নামা নিয়ে রতন সাহা যে জোর হইচই বাধিয়েছিল সে তো তার বিশটা হাজার টাকা গচ্চা গেছে বলে। তারপর আবার কচি ন্যাংটা মেয়ে চেটে খাবার সাধ মেটেনি। তাই সুরথের পাছায় তখনের মতো পড়েছিল লাথি। তা বলে আবার যখন দরকার, তখন ওরই খোঁজ চলত। এবারও নিশ্চিত কিছু মতলব আছে। এখন যে এই লোকজনের ভিড়ে সুরথ পছাড়ির ক্ষমতা নিয়ে কেমন প্রশ্নের পর প্রশ্ন তুলে যাচ্ছে রতন সাহা, যখন দিন ছিল ওর, তখন হলে পারতো? তল্লাট জুড়ে তখন বুক কাঁপানো সব গল্প। একবার নাকি জবাফুল ছুঁড়ে মেরে কালো বিল্লি্র দোষ কাটিয়ে তাকে সাদা করেছিল। বদ মানুষকে কুত্তা বানিয়ে সে অনায়াসে পুষে রাখতে পারতো। নাগেরা তার জিভ, কান কামড়ে ঝুলে থাকতো সাধন-আসনে। উলটে এই রতন সাহা তখন তাকে কতো তোল্লাই দিত। রতন অবশ্য ভালো করে জানে, এটাই রাজনীতি।দরকারে মাথায় তোলো, দরকারে পায়ে নামাও। এখন, একটা কাজ আদায়ের আগে, পাঁচজনের সামনে ওকে একটু চাপে রাখো।তাছাড়া বেশী সুনাম মানেই লোকের মনে বেশি জায়গা। মনে অন্যের জন্য বেশি জায়গা মানেই তোমার জায়গা কম।
সুরথের নেশাটা আজ জমেছিল ভালো কিন্তু রতন সাহাটা সব নষ্ট করে দিলো। সময় একটা তার সত্যিই ছিল তো। দুনিয়াজোড়া নাম ছিলো ওর। শুধু তো মন্ত্রতন্ত্র ঝাঁক-ফুঁড় নয়, তার মতো সাপ ধরার ওস্তাদ এই তল্লাটে আর কেউ ছিল না। সেই সাপ আবার বেচে দু’পয়সা কামাই হত।এরই মধ্যে সঙ্গের চেলাটা একদিন মাঠঘাট, কোত্থেকে যেন জুটে গেলো। জৈষ্ঠের গরমে সাপে ডিম ছাড়ে বেশী। তেমন এক বিকালে মাঠ-ময়দানে সাপের খোঁজ। এই ছোকরা ঠিক জুড়ে গেলো সাথে। বিদ্যে শিখবে, সাপুড়ে- গুণিন হবার সাধ। বোঝালেও বোঝে না। এর আবার কিসের মন্ত্র আর কিসের কী। সব বুজরুকি নয় চালাকি। তবে সাপ কে খেলিয়ে ধরার কায়দাটাই মহাবিদ্যে। আর বাকিটা ওস্তাদের গোপন শিক্ষা, মানুষের মনের ভিতর সেঁধিয়ে যাবার সুলুকসন্ধান।
আজ অবধি সুরথ একটা আশায় আশায় আছে। হোক না শরীর কঙ্কালসার, চোখে ঘোর, চামড়ার ভাঁজে আরও ভাঁজ কিন্তু ওস্তাদের দিব্বি, শেষ একটা ভেল্কি দেখাবার পণ তার কিম্বা বুজরুকি হাপিস করে ফেলার জবর খেলা। তবে রতন সাহা ঠিক কী চায়, আগে সেটা বুঝে নিতে হবে।
-“হেই সুরো, তুই থাকতে মোর এত্যো দিগদারি ক্যেনো হে? তুই কি ছিলিস- ওঝাদের চূড়ামণি আর কি হয়্যে গেলি।সাপ সাপুড়ে, শ্মশান-মস্যান চরি বেড়াস।সাধনে মন লাই র্যে! গুরুর এমন হেলাছদ্দা কর্যিস লাই, পাপ লাগবে।
ভিড়ে আবার গুঞ্জন ওঠে। সুরথ ভাবে-“হেই স্লা, ই মালটো পালটি খায় কেন্য? এই তো মোর পিণ্ডি চটকাইছেল্যো”
রতন সাহার হিসেব ভিন্ন। এবার পার্টি ইলেকশনে আর টিকিট দেবে না বলছে। ওর ব্যাপারে এলাকার রিপোর্ট ভালো না। তাছাড়া বয়স নাকি অনেক হল।রাধিকারঞ্জন অবশ্য অনেকদিন ধরে বলছে ওদের দলে যোগ দেবার জন্য। ছ’মাস আগে যোগ দিলে ওদের হইয়ে দাঁড়ানো যেতো কিন্তু এখন গেলে কি আর…………… দুনিয়া ইধার কা উধার, টিকিট তার চাইই। এখন যেহেতু ভিড় একটা জমেই আছে, এখানেই হতভাগাকে রাজি করাতে হবে। আজকাল বড় আপন মর্জিতে চলে। সবার সামনে যা ওসকানোর, সেটা হয়ে গেছে। এখন ব্যাটা নির্ঘাত ভিতরে ফুঁসছে। এবার সবার সামনেই রাজি করাতে হবে। বড় যজ্ঞ চাই তার। জীবনের সব থেকে বড় যাগ। বড় বাজি রাখবে কিন্তু টিকিট তার চাই। মুখে বলে- “ইটো ভারি একটো জরুরি বিষয়। এই গাঁ ক্যেনো, আশেপাশে বিশটা গাঁয়ের ভালোমন্দের পেশ্ন। মোদের বংশধর খেয়্যেপর্যে বাঁচবে লাকি, তার পেশ্ন………”
সুরথ শোনে আর মনে মনে হাসে। বিড়বিড় করে-“বুঝি গো বুঝি আঁটক্যুইড়া হ্যে। তুমার বংশধরের বড় চিন্তা! হা হা হা”
ভিড় এবার কথা বলে-“আপনে আর সুরথ বিদ্যমান, মোদের হাল আর ক্যে ঠিক করব্যে!?”
নড়েচড়ে ঝাড়া মেরে ওঠে সুরথের বাঁকা পিঠ-“ বাপু হে সকল, মোরে ক্ষমা দ্যেন গো, ইসব ভুলানোর কাজ আর মনে লাগে না।বাণমারা থ্যেকে বশ করাটো কুনো বিদ্যা লয়, লরকের বিদ্যা এমন হয়। বেশির ভাগ সব ভেল্কি আইজ্ঞা……… হেই জো মোর চেল্যাটো দ্যাখো, কেমন কর্যে সাপ ধরতে, মোর ঠাঁই শিখ্যেছে কায়দা সব। কুনো মন্ত্র জানে লাই তবু দিব্ব ধর্যে। উয়ার হাত আর মাথা বড় সাফ হ্যে!”……একটু দম নেয় সে, -“তবে ইহাও ঠিক, পিথিবির কিছু বিদ্যে আছে হঁ। আসল গুরু ধ্যরে শিখ্যে পড়ে লিতে পারলে, অই কি বলে, সেবা আর সাধন কইরতে পারল্যে উ বিদ্যা বুকের ভীষণ ভিতর ঠাঁই লেয়। খুউব সাচ্চা হত্যে লাগে। কিছু বিদ্যে আছে গ, যারা কথা কয়…..
“আররে থাম র্যে!” ধমক দিয়ে থামাতে চায় রতন সাহা।এবার যেন কাজের কথায় আসতে চায়। “তুই তো সম্মোহন, কুহক কতো বিদ্যে জানিস, শিখ্যেছিস গুরুর থেক্যে। তো এইবার আমার ধারকর্জগুলো শোধ কর”
সুরথ মৃদু মৃদু মাথা নাড়ে, হাসে।
-“হাসি লয় সুরো! বারবার আমার কাজ লিয়ে তুই গড়বড় করিস।
-“কত্তা, এ তোমার বড় বড় চাওয়া গ! সুরথ তুমার দিগে মেইয়্যা মানিষের মন ঘুরাবে, তুমার ক্ষেতে বিস্টি লামাবে, তুমারে ভুটে জিতাবে, ইমনতর একা একা ভোগের সাধন অশুদ্ধ হইয়্যে যায় যে।
কিন্তু ভিড়টা এই সব ব্যাপারে খুব আগ্রহী। রতনও বোঝে সেটা। -“কি ভাইসব, কিছু বল তুমাদের উস্তাদকে। আর একার ভোগ ক্যেনো হে? আমি টিকিট পেল্যে, জিতলে এলাকার উন্নতি, চাষবাস, পড়ালিখা, কামকাজ, চিকিচ্ছে, সব…… কি হ্যে! বলো সবাই!
ভিড় বলে- “হ্যাঁ হ্যাঁ , তা ঠিক তা ঠিক!”
সুরথ ঘোলা চোখ তুলে তাকায়।সবেতেই ফক্কিবাজি। আবার চোখ বোঁজে। চোখের উপর ভাসে সেদিনের ধরা একজোড়া কালাজ শঙ্খিনী। বাঁহাতে ল্যাজের খুঁট ধরে ডান হাতে মুদ্রা করলে সাপের নজর ডান হাতে, তাই ডান হাত সামলে। কিন্তু এই সাপ দুটো সাংঘাতিক। নজর ল্যাজের খুঁটে। ছোবল মারে সেখানে কিন্তু তারও আগে ছোঁ মেরে ঘাড় চেপে ধরে সে, একে একে দুটো শঙ্খিনীকেই বন্দী করে ফেলে।…………… ফোঁস করে শ্বাস ফেলে। আবার চোখটা খোলে। পিঠটা টান করে উঠে দাঁড়ায়। – “কত্তা, দুনিয়ার বশ চাও? বেশীরভাগ তো ফক্কিবাজি গ। দুব্বল মন আর হাতসাফাই লয়ত দব্বোগুণ। মোর জীবনের বাজি গো, কথা দিলাম! ইচ্ছাপূরণ যজ্ঞ হবেক, মোর বুকের মধ্যি ঘুমিয়ে আছে সে, তার্যে জাগাবো হে, অন্তত একবারের তরে।”
-“তুই শুধু আমায় কবে কি যোগাড় দিতে হবে বল।”
-“সে অনেক কিছু লাগবে গ। ধরো যজ্ঞি কাঠ, আধা কিলো খাঁটি ঘি, হলুদ বাতাসা, ধুপ-ধুনা, রুদ্রাক্ষ, ধনেশ পাখির ঠোঁট, শ্যালের লোম, কালা বিল্লির নখ আর একজোড়া কালাজ- শঙ্খিনী জাত।”
– “ঘি বাতাসা সব ঠিক কিন্তু………”
-“বাকি সব মোর জিম্মাদারি! হাজার ত্রিশ টাকা দিও।তুমার হাতের ময়লা গ। মোরে না, টাকা ছুঁয়া যাবে না। চেলাটা হাতে দিও কত্তা। দুই দিন পর একাদশী, শ্মশানের পূর্বদিকের মাঠে দুই পহরে বসবো মোরা- তুমি, আম্মি আর আমার কালাজ শঙ্খিনী!”
সেই একাদশীর রাত প্রহরে প্রহর পার হয়ে গেল। নতুন ভোর এসে দিন শুরু হল। কিন্তু রতন সাহা কিম্বা সুরথ, কাউকে আর দেখতে পাওয়া গেলো না। সুরথের চেলাটাকেও নয়। শুধু যাদের শ্মশানের কাছাকাছি বাস, ভোররাতে প্রাতঃকৃত্য করতে বেরিয়ে যেন সবাই শুনেছে সুরথের ফিসফিসে স্বর বাতাসে ভেসে ভেসে ফিরতে- “বুজরুকি হ্যে, সব বুজরুকি!………”
তারিখঃ এপ্রিল ৯, ২০২১