সুরের লতা

 

কটাই কণ্ঠ। ব্যস, পরিচয় দেওয়ার জন্য যাঁর ক্ষেত্রে এই ছোট্ট কথাটাই যথেষ্ট, কিন্তু এই সামান্য জিনিসটাই যেন আরও অসামান্য হয়ে ওঠে যখন ভাবতে শুরু করা হয় এমন একজনের কথা, সঙ্গীতকে যাঁর নিজের সারা জীবনের পার্থিব চাওয়া-পাওয়ার সমস্তটাই উৎসর্গ করা, সেই চিরন্তনী সংগ্রামী সুরের সাধিকার অপরিসীম পরিশ্রম, নিষ্ঠা, সংযম, অধ্যবসায়ের দ্বারা নিজেকে বিশ্বের আপামর সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের মনে স্থায়ী এক আসন লাভ করে তোলার মধ্যে দিয়ে, যা কোনোদিনই সরে যাওয়ার নয়, চিরদিনই অটুট থাকার, তিনি সেই কিন্নরকণ্ঠী লতা মঙ্গেশকর।

তাঁর কথা লিখতে গিয়ে বলতে হয়, কৈশোরে পিতৃহারা একটি মেয়ে, তার থেকেও বয়সে আরও ছোট নাবালক চার ভাইবোনদের দায়িত্ব একার ছোট্ট কাঁধে নিয়ে শুধুমাত্র মাথা গুঁজবার আর রোজগারের আশায় মারাঠি সিনেমায় গাইতে এবং অভিনয় করতে শুরু করে, তার প্রথম গানটা রেকর্ডিং-এর পরেও অবশেষে সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তখনও সে নিজেই মনে হয় জানতো না, ভবিষ্যত তার জন্য কি ইতিহাস লিখে রেখেছে! যে বা যাঁরা লতাজির স্ট্রাগলিং টাইমে তাঁর ভয়েসকে ‘অত্যন্ত সরু’ বলে অবজ্ঞা করেছিলেন, কালের অদ্ভুত নিয়মে তাঁরাই পরে লতাজিকে তাঁদের সিনেমায় গান গাওয়ানোর জন্যে পীড়াপীড়ি করবেন। এ সব

সুরসম্রাজ্ঞীর জীবনেরই ঘটনা।

মারাঠি, বাংলা, হিন্দি ইত্যাদি ছত্রিশটা জাতীয় ভাষায়, ইংরেজি, নেপালি, সিংহলি প্রভৃতি আন্তর্জাতিক ভাষায় গান গাওয়া, ১৯৬৯ -এ পদ্মভূষণ, ১৯৮৯ -এ দাদাসাহেব ফালকে (ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ সম্মান), ১৯৯৯ -এ পদ্মবিভূষণ, ২০০১ -এ ভারত-রত্ন, ২০০৯ -এ ফ্রান্সের সাম্মানিক লিজিয়ন অনার এসব দিয়ে মনে হয় বেঁটেখাটো নম্রমুখের এই মানুষটির পর্বতসমান উচ্চতা পরিমাপ কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। তাঁর সময়ের মুকেশ, তালাত মেহমুদ, হেমন্ত, মান্না, কিশোর থেকে এই প্রজন্মের প্রায় সব শিল্পীর সঙ্গেই তিনি ডুয়েট গান গেয়েছেন। তবে মহম্মদ রফির সঙ্গে গাওয়া দ্বৈত কণ্ঠের গান পরিসংখ্যানের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি, যদিও গান গাওয়ার পারিশ্রমিক নিয়ে একসময়ে দুজনের মধ্যে মতবিরোধ ও মনোমালিন্য হয়েছিল, তিনবছর দুজনে একসঙ্গে না গাইলেও পরে অবশ্য এটা মিটে যায় শংকর জয়কিশানজির মধ্যস্থতায়।

সময়ের সাথে তিনি নিজের স্বতন্ত্র স্বতঃস্ফূর্ত গায়কী দ্বারা যুগের পর যুগ মনোরঞ্জন করে গেছেন, তাঁর সমকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী নূরজাহান, শামসাদ বেগম (পরবর্তীকালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হলে সেখানেই থেকে যান, যদিও সঙ্গীতকে কোনো বেড়া, সীমানা, ভাষা দিয়ে বাঁধা যায় না), প্রিয় সহেলী গীতা দত্ত, সুমন কল্যাণপুর, সহোদরা আশা এঁদের সবার অসাধারণত্বের মধ্যেও নিজের এক ভিন্নতর জায়গা তৈরি করা সেই সময় খুব সহজ কথা ছিল ভাবলে মনে হয় অনেকটাই ভুল হয়ে যাবে।

সঙ্গীতশিক্ষার প্রাথমিক পাঠ বাবা দীননাথ মঙ্গেশকরের কাছেই, উনি নিজেও মারাঠি ও কোঙ্কনী গায়ক এবং থিয়েটার অভিনেতা ছিলেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবার মিউজিক্যাল প্লে তে শিশুশিল্পী হিসাবে মঞ্চে প্রথম আত্মপ্রকাশ করলেও অল্প বয়সেই

দীননাথ মঙ্গেশকরের মৃত্যু হয়।

তেরো বছর বয়সে সংসারের দায়িত্ব নিজের ছোটো কাঁধে তুলে নেওয়া সেদিনের সেই সদ্য কিশোরী হেমাই ক্রমে সুরের জগতে আরাধ্যা দেবী সরস্বতী, নাইটিঙ্গেল অব ইন্ডিয়া প্রভৃতি বিবিধ সম্মানীয় অভিধায় ভূষিত হবে সময়ের পরবর্তীতে এসে। আমরা সাধনা করতে পারি না, কালের গর্ভে হারিয়ে যায় আমাদের সবকিছু, আর এই মানুষটি বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ, সুরের আরাধনা করে গেছেন, জীবন যুদ্ধে বারবার বিপর্যস্ত হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন, আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছেন, কোন যুগ আগে সেই ছোটবেলা থেকে তার গান শুনে আসছি, আমার বাবা ঠাকুরদারাও শুনেছেন, পরের প্রজন্মও শুনবে।

নিজে স্কুল যাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল যেহেতু তার বোন আশাকে তার সাথে স্কুলে যেতে দেওয়া হয়নি, তারপর ভাইবোনকে বড় করা, তাদের সঙ্গে নিয়ে জীবনের উত্তর পর্ব পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার পরেও আশা ভোঁসলে যখন তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ঝড়ঝাপ্টা কাটিয়ে গায়িকা হিসাবে নিজেকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা করছেন, তখন যেন দিদি লতার সাথে কোথাও একটা মানসিক দূরত্ব, এবং অনেক পরে সময়ের সাথে সাথে আবার অনেকটা স্বাভাবিক হওয়া এইসব আর-পাঁচটা৷ সাধারণ মানুষদেরই জীবনের মতো।

সঙ্গীতের প্রায় সমস্ত বড়ো সম্মানই পাওয়া এই লতা মঙ্গেশকরকেও জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে বলতে হয়েছে, তিনি আরেকবার লতা মঙ্গেশকর হয়ে জন্মাতে চান না। দীর্ঘজীবনে এত দুঃখ পেতে হয়েছে, এত লড়াই তাঁকে করতে হয়েছে তাঁর মতো সাধিকারও পথ চলায় বুঝি অনেক না-বলা কথা থেকে যায়।

শোনা যায়, একবার তাঁর খাবারে এমনকিছু প্রয়োগ করা হয়েছিল যাতে ওঁর কণ্ঠ চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়, যে কাজের লোক তখন লতাজির বাড়িতে কাজ করতেন, তিনি তারপর বেপাত্তা হয়ে যান।কিছুদিন অসুস্থও হয়ে পড়েন, গান প্রাক্টিস, রেকর্ডিং থেকে সাময়িক বিরত থাকতে হয়। সুস্থ হয়ে তারপর আবার স্বমহিমায় ফেরা এবং শ্রোতাদের মন জয় করা এই মানুষটি জন্মসূত্রে মারাঠি হলেও বাংলাভাষাকে ভালোবাসতেন, বাংলার জল-মাটি-বাতাসকে ভালোবেসেছেন, বাংলার টানে বারবার ছুটে এসেছেন, ভালোবাসতেন বাঙালি মানুষদের, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় হয়ে উঠেছিলেন তাঁর কাছে এক পরম শ্রদ্ধার পারিবারিক অন্যতম কাছের মানুষ, সলিল চৌধুরীর সুরে লতাজির একের পর এক সুপারহিট গান এখনও কালজয়ী। তাঁর মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়িতেও রেওয়াজ করার ঘরে আজও শোভা পায় শ্রীরামকৃষ্ণের ফটো, বিবেকানন্দের বই, কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের লেখা পড়তেও খুব ভালোবাসতেন লতাজি।

জীবনের শেষ রেকর্ড করা গানও সলিল সুরেই, আর সেটাও বাংলা গানই ‘আজ কাল আমি’, মৃত্যুর কয়েক বছর আগে কিছু আগে। এছাড়া মেলোডি মেকার মদন মোহনের সুরে লতা মঙ্গেশকরের ‘লাগ জা গলে’ (ও কন থি), নয়নো মে বদরা ছায়ে,মেরা সায়া (‘মেরা সায়া’) আজও সমান জনপ্রিয়। এই লতা মঙ্গেশকরই পরবর্তী কালে আমাদের প্রজন্মের এ আর রহমানের সুরে পরিণত বয়সে ‘জিয়া জ্বালে’ (দিল সে)-ও সমান তালে সমান মুন্সিয়ানায় গেয়ে দেখিয়েছেন বয়সজনিত অসুবিধাকে এক তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে। এছাড়া ‘দিল তো পাগল হ্যায়’,’ দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ প্রভৃতি সিনেমায় লতাজির গাওয়া গান ওই সময়ে যারা টিনেজ পার করেছেন তাদের চিরদিনই মনে থাকবে। কোনো সুরকারকেই তিনি অসম্মান করেছেন বলে শোনা যায় নি, তাঁর সময়ের মিউজিক কম্পোজার থেকে শুরু করে এখনকার কম্পোজারদের সুরেও তিনি একই রকম স্বচ্ছন্দ দেখিয়ে গেছেন। উচ্চাঙ্গ সংগীত, সেমি ক্লাসিকাল, ক্যাবারে, গজল, সুফি, রবীন্দ্রসঙ্গীত, ভজন, বেসিক গান, সিনেমার গান প্রভৃতি সমস্ত ধরণের গানেই তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন অনেক অনেক বার। এমন কোনো স্টাইলের গান নেই যা মনে হয় ওনার না গাওয়া রয়ে গিয়েছে, বা গাওয়া হয় নি।

তাই শচীন দেব বর্মন, নৌশাদ, বসন্ত দেশাই, সি রামচন্দ্রন,শংকর জয়কিশান,ও পি নাইয়ার, অনিল বিশ্বাস, মদন মোহন, রাহুল দেব বর্মন, সলিল চৌধুরী, হেমন্ত কুমার, কল্যাণজি আনন্দজি এদের সবার গানেই একের পর মিথ গড়েছেন, মিথ ভেঙেছেন, উনি নিজেই। হেমন্তের সুরে ‘বন্দেমাতরম’ আজও শোনা যায়, এছাড়া

হেমন্ত সুরেই ‘মেরা মন ডোলে'(নাগিন)

খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

‘কাহি দীপ জ্বলে কাহি দিল’ (বিশ সাল বাদ)-এ নেপথ্য কণ্ঠদানে লতার দ্বিতীয়বারের ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পাওয়া, যদিও তিনি ১৯৫৯ সালের পূর্বে নতুন প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন (কারণ তখন শুধু নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসাবে দেওয়া হতো, পুরুষ বা নারী এই শ্রেণীবিভাগ ছিল না, সেই প্রতিবাদে ১৯৫৬ সালে ‘চোরি চোরি’ সিনেমায় শংকর জয়কিশানের সুরে ‘রসিক বালমা’ গানটি গাইতে অস্বীকার করেন। তবে পরে মেল, ফিমেল দুই ক্যাটেগরি রাখা হয়, ফিল্মফেয়ার আওয়ার্ডে, লতাজি প্রথমবার পান ১৯৫৯ এ ‘মধুমতী’ সিনেমায় সলিল চৌধুরীর সুরে ‘আজা রে পরদেশীয়া’, তৃতীয়বার ১৯৬৬ তে ‘খানদান’ সিনেমায় ‘তুমহি মেরে মন্দির তুমহি মেরে পূজা’, চতুর্থবার ১৯৭০ -এ জিনে কি রাহ সিনেমায় ‘আপ মুঝে আচ্ছে লাগনে লাগে’, তারপর ১৯৯৩ সালে ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার এবং ১৯৯৪-তে ‘হাম আপকে হ্যায় কউন’ সিনেমার ‘দিদি তেরা দেবার দিবানা’ এবং ২০০৪ সালে সঙ্গীতজীবনের পঞ্চাশ বছরপূর্তিতে ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন।)। ১৯৭৪ সালে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক গান রেকর্ড করার জন্য গিনেস বুক অফ রেকর্ডে তাঁর নাম ওঠে। ১৯৮০ সালে দক্ষিণ আমেরিকার সুরিনামের সাম্মানিক নাগরিকত্ব, ১৯৮৭ সালে আমেরিকার সাম্মানিক নাগরিকত্ব পান। ১৯৯০ সালে পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে সাম্মনিক ডক্টরেট, ১৯৯৬ সালে ভিডিওকন স্ক্রিন লাইফটাইম পুরস্কার, ২০০০ সালে আই আই এফ লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার -এরকম আরো বহু পুরস্কার ও সম্মানে তিনি ভূষিত হন। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

বাংলাতে ২০০টি গান রেকর্ড করেছিলেন, তন্মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য গান হল-

আজ নয় গুনগুন গুঞ্জন প্রেমে, প্রেম একবারই এসেছিল, রঙ্গিলা বাঁশিতে কে ডাকে, না যেও না রজনী এখনও, ওগো আর কিছু তো নাই, আকাশ প্রদীপ জ্বলে, একবার বিদায় দে মা, সাত ভাই চম্পা, নিঝুম সন্ধ্যায়, চঞ্চল মন আনমনা হয়, বাঁশি কেন গায়, যদিও রজনী পোহাল তবুও, ও মোর ময়না গো, কেন কিছু কথা বলো না, আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব,চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়, চঞ্চল ময়ূরী এ রাত, কে যেন গো ডেকেছে আমায়,আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন, কেন গেল পরবাসে, মঙ্গল দীপ জ্বেলে প্রভৃতি।

উল্লেখযোগ্য হিন্দি গানের মধ্যে বলা যায়,

তাঁর গলায় পনেরো হাজারেরও বেশি হিন্দি গান রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কিছু হিন্দি ছায়াছবির জনপ্রিয় গান-

আয়েগা আনেওয়ালা (মহল), আজা রে পরদেসি (মধুমতী), পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া (মুঘল-ই-আজম), আল্লা তেরো নাম (হম দোনো), অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো, লগ যা গলে (ওহ কৌন থি), আজ ফির জিনে কি (গাইড), পিয়া তো সে নায়না লাগে রে(গাইড), রহে না রহে হম (মমতা), তু জাঁহা জাঁহা চলেগা (মেরা সায়া), হোঁঠো মে অ্যায়সি বাত (জুয়েল থিফ), আ জান-এ যা (ইন্তেকাম), রয়না বিতি যায়ে (অমর প্রেম), তেরে বিনা জিন্দেগি সে কোই (আঁধি),চলতে চলতে ইঁয়ুহি কোই (পাকিজা), দুনিয়া করে সওয়াল তো হাম বহু (বেগম), অ্যায় দিল এ নাদান রাজিয়া (সুলতান), নাম গুম জায়েগা (কিনারা), সুন সাহিবা সুন (রাম তেরি গঙ্গা মইলি), সিলি হাওয়া ছু গয়ি (লিবাস), ইয়ারা সিলি সিলি (লেকিন), দিল হুম হুম করে (রুদালি), দিল তো পাগল হ্যায় (দিল তো পাগল হ্যায়), জিয়া জ্বলে (দিল সে)তেরে লিয়ে (বীর জারা), তুঝে দেখা তো ইয়ে জানা সনম (দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে) উল্লেখ্য। এছাড়া তিনি কিছুকাল রাজ্যসভার মনোনীত সম্মানীয় সদস্যও ছিলেন।

কিন্তু এসব তো শুধুই বাইরের ব্যথা ঢাকার ওষুধ। এসবের পরেও শিল্পীরা জীবনে বড়ই একা, তা সে অনেকটাই।

তবে সবকিছুরই একটা শেষ থাকে।

শিল্পীজীবনের সুবিপুল কর্মকাণ্ডেরও তাই যবনিকা পড়ে একদিন।

লতা ২০২২ সালের ৮ ই জানুয়ারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনা মুক্তও হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী শারীরিক অসুস্থতায় অবস্থার অবনতি হয়। তিনি ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮:১২ নাগাদ হাসপাতালে বিরানব্বই বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মুম্বাইয়ের শিবাজী পার্কে পরম রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হয়, সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সচিন তেন্ডুলকর, শাহরুখ খান প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে দুদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে শিল্পীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৭ ফেব্রুয়ারি অর্ধদিবস ছুটি এবং পরবর্তী পনেরো দিন তাঁর গান বাজানোর কথা ঘোষিত হয়।

শিল্পী চলে যান, কাজগুলো রয়ে যায়। লতা মঙ্গেশকর সম্বন্ধে এটাই বলার থেকে যায়, যে ওনার কণ্ঠটা চিরদিনের, আর তার কোকিল সুলভ আওয়াজটা তাঁকে চিনিয়ে যাবে, আমরণকাল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

প্রকাশক - Publisher

Site By-iconAstuteHorse