ইস্তান্বুলের ইস্তাহার
রুবানা ফারাহ আদিবা (ঊর্মি )
কনস্ট্যান্টিনোপল – বাইজান্টাইন সম্রাট কনস্ট্যান্টিন১ এর নামানুসারে গোড়াপত্তন হয় এই শহরের। রাজধানী হিসেবে ১১০০ বছর বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের কুক্ষিগত থাকে এই শহর। এর চারপাশের দুর্ভেদ্য দেয়াল অতিক্রম করার দুঃসাহস অনেকেই করেছেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁদেরকে। জানা যায়, ইউরোপিয়ান কারিগরদের সুকৌশল এবং বিস্ময়কর প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছিল এই দেয়াল। শেষ সম্রাট, যিনি অসংখ্য সৈন্য, যুদ্ধাস্ত্র এবং লোকবল হারিয়ে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে বিফল মনোরথে ফিরে এসেছিলেন তিনি হলেন, আনাতোলিয়ার সুলতান মুরাদ।
২২শে ডিসেম্বর ২০২২।সন্ধ্যের দিকে ইস্তান্বুলে এসে পৌঁছেছি। এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন, ব্যাগেজ ক্লেইম সব শেষ করে যখন বাইরে এলাম, দেখলাম AK47 নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দুজন সশস্ত্র সৈন্য দরজার দু’পাশে। এছাড়াও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য নিরাপত্তারক্ষী। আমাদের কিছু বন্ধু যারা ইতিমধ্যে ইস্তান্বুলে এসে ঘুরে গেছেন, তারা পই পই করে সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, পথে ঘাটে কারও সাথে অর্থ বিনিময়ের ব্যাপারে একটু সচেতন ও সাবধান থাকবার। কেন না, দরকষাকষি তো আছেই এ ছাড়াও ছিনতাইয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। যাই হোক, দরদাম করে একটা ট্যাক্সি ভ্যানে উঠে বসলাম। কিছুটা ক্লান্তি ও অবসাদ জড়িয়ে থাকলেও নতুন শহরে পা রাখবার আনন্দ উত্তেজনায় তা ভুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু, ট্যাক্সির ভেতরে কড়া সিগারেটের গন্ধে মাথা ধরে গেল নিমেষেই। পড়ন্ত বিকেলের আবছায়া শহর জুড়ে, শীতকালীন রুক্ষতা গাছের শাখায় শাখায়। হাইওয়ে ধরে সাঁই সাঁই করে ছুটে চলেছে আমাদের বাহন। একটা সময় সারথী ঢুকে পড়ল গলি ঘুপচিতে। পাথর দিয়ে গড়া সরু সরু পথ, আর তার দুপাশে যেন মাটি ফুঁড়ে উঠেছে বাড়িঘর, গায়ে গায়ে লাগানো একে অপরের দেয়াল।পুরোনো ঢাকার অলিগলির কথা মনে পড়ে গেল। বহুতল বাড়িগুলোতে দেখলাম, এক জানালা থেকে বিপরীত বাড়ির জানালা পর্যন্ত একটা তার সাঁটানো এবং তার ওপর রং বেরং এর কাপড় শুকোচ্ছে। কিছু ছোট্টো ছেলের দল স্কুল শেষে জটলা পাকিয়ে বসেছে। একটু বয়স্ক মানুষজন চায়ের দোকানে বসে সিগারেট ফুঁকছে। সবই যেন ভীষণ চেনা দৃশ্য। বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর মৌলিক অবকাঠামো একইরকম। চড়াই উৎরাই গলির উড়ালে হঠাৎ করেই যেন ঢুকে পড়লাম তুলনামূলক ভাবে একটু চওড়া ও বেশ ঝলমলে ব্যস্ত রাস্তায়। এই সেই Istiklal Street, ইস্তান্বুলের এক অন্যতম ল্যান্ডমার্ক বলা যেতে পারে। Istiklal অর্থ স্বাধীনতা। ১৯২৯ সালে তুরস্কে প্রজাতন্ত্র উন্মেষের ক্রান্তিকাল স্মরন করেই এই নামকরণ। এই রাস্তা ধরে হেঁটে গেলে অন্য প্রান্তে রয়েছে বিখ্যাত Taskim sqare , দাবী দাওয়া আন্দোলনের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে প্রায়ই। অনেকটা ঢাকার শাহবাগ এর মতোই।
হঠাৎ ট্যাক্সির কড়া ব্রেকে বুঝতে পারলাম আমরা আমাদের নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে গেছি। এবারের সফরে আমরা কোনো হোটেলে থাকব না বলে ঠিক করেছিলাম। Airbnb র বিষয়টা বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। এই ফাঁকে এর ইতিহাসটা একটু বলে নিই। ২০০৭ সাল। সানফ্রান্সিসকোতে বসবাসরত দুই বন্ধু অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল।শহরে সে সময়টা একটা বড় গোছের কনফারেন্স হতে যাচ্ছে। হোটেলগুলো ঝটপট ভরে যাওয়ায়, কিছু অতিথি কোনো হোটেলেই থাকবার ব্যবস্হা করতে পারছেন না। এই সময় দুইবন্ধু তাঁদের বাড়িতে অর্থের বিনিময়ে সেই অতিথিদের স্বাগত জানালো। ওদের বাড়িতে কয়েকটা Air mattress ছিল। হাওয়া ভরিয়ে মুহূর্তেই শোবার ব্যবস্হা এবং পরদিন টাটকা প্রাতঃরাশের প্রতিশ্রুতি। বেশ কিছু অর্থ উপার্জন হয়ে গেল দু’বন্ধুর। এই থেকে Air Bed and Breakfast ব্যবসার শুরু।তবে আজকাল একটু ভিন্নতর আয়োজনে। প্রাতঃরাশ এর ব্যবস্থাটা এখন আর নেই। বাড়িওয়ালা অতিথিদের হাতে চাবি এবং জরুরী কিছু নির্দেশনা জানিয়ে “Please make yourself comfortable “ বলে তার দায়িত্ব শেষ করেন। ইস্তান্বুলে একটি অ্যাপার্টমেন্টের দোতলাতে আমাদের থাকবার ব্যবস্হা করা হয়েছে। একজন তুর্কী তরুণ চাবিসহ আমাদের সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে গেল। পুরোদস্তুর ফার্নিশড দুটো বেডরুম, লিভিং ও ডাইনিং হল। তার একপাশে রান্নার আয়োজন। বেশ সুন্দর ছিমছাম পছন্দসই। তিনদিনের জন্য এটাই আমাদের সাময়িক বাসস্থান।
একটু গড়িয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে কয়েক পা হাঁটলেই পড়ে Istiklal Street . নতুন বছরের আনন্দ আলোকসজ্জায় অপরূপা হয়ে উঠেছে রাতের ইস্তান্বুল।রাস্তার দুপাশে আকর্ষনীয় Decor এর বিপণীবিতান, রেস্তোরা, দূতাবাস। পর্যটক এবং স্হানীয়দের হাত ভর্তি কেনাকাটা। হাসি খুশি ফূর্তিতে ভরপুর প্রায় সবাই। ভালো লাগছিল হাঁটতে। অন্য একটা দেশ, অন্য সংস্কৃতি এবং অন্যতম অভিজ্ঞতা। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম, প্রায় পুরো বিশ্বেই যখন ধুমপান বিরোধী প্রচারনা চলছে, এরা ভেতরে বাইরে বেদম ধোঁয়া খেয়েই যাচ্ছে। রেস্তোরাগুলোতে টেবিলের ওপর ছাইদানি থাকবেই, কোনো কোনো রেস্তোরাতে আছে “সীসা”র ব্যবস্থা।রাতে মজাদার খানা খেয়ে বাড়ি ফিরে লম্বা ঘুম। পরের দিনের পরিকল্পনা Blue Mosque এবং AyaSofia Mosque.
সুলতান মুরাদ তাঁর বারো বছরের যুবরাজ পুত্র মেহমেতের হাতে তুলে দিয়েছিলেন আনাতোলিয়া রাজ্য। শুনিয়েছিলেন কনস্ট্যান্টিনোপল পরাজয়ের গ্লানি ও অপমানের শোকগাথা। কিশোর বয়সে প্রতিশোধের উন্মাদনা এবং ক্ষোভ যুবরাজ মেহমেতকে প্রায়ান্ধ করে দিয়েছিল। চাইছিলেন ঐ বয়সেই সূচিত হোক পাল্টা প্রতিশোধ। উজির নাজিরকে অস্হির করে তুলছিলেন। সুলতান মুরাদ বুঝতে পেরেছিলেন ক্ষমতা ব্যবহার করার জন্য এখনও সঠিক সময় হয়নি যুবরাজের। তাকে প্রাজ্ঞ করে তুলতে সময়ের প্রয়োজন। সুলতান মুরাদ আবারও রাজ্যভার হাতে তুলে নিলেন এবং তৈরী করতে লাগলেন যুবরাজ মেহমেতকে যুদ্ধবিদ্যায়। যূদ্ধশ্রাস্ত আয়ত্ব করতে পড়তে হতো জুলিয়াস সিজার, আলেকজান্ডার। নিরলস পাঠ পরিশ্রম ও অনুশীলনে শানিত ও ক্ষুরধার হলো যুদ্ধবিদ্যা এবং রণকৌশল। এবার কৈশোরের উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছে অনেকটাই, পরিণত মননে ও বুদ্ধিদীপ্ততার আলোয় অপেক্ষা করতে লাগলেন সঠিক সময়ের। বিশ্বের তাবড় তাবড় ইতিহাসবিদরা বলেন, সুলতান মেহমেতের মতো বিচক্ষণ যোদ্ধা পৃথিবীতে কম জন্মেছে। অভিনব রণকৌশল, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মারনাস্ত্র, সেরা সৈন্যদল নিয়ে হানা দিলেন সেই দুর্ভেদ্য রাজধানী। টানা ৫৫ দিন বিভীষিকাময় যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে ফিরলেন। ।উনিশ বছর বয়সে ফিরে পেলেন আনাতোলিয়ার সিংহাসন। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রতিষ্ঠিত হলো প্রবল পরাক্রমশালী অটোমান সাম্রাজ্য। প্রায় চারশত বছর বিশ্ব দাপিয়ে রাজত্ব করেছিল এই অটোমান সাম্রাজ্য।
কথিত আছে, কনস্ট্যানটিনোপল জয়ের পর লুটতরাজের জন্য স্থানীয় অধিবাসীদের কিছুটা সময় দিয়েছিলেন সুলতান মেহমেত। লুটপাট শেষে Hagia Sofia র তালা খুলে অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন । Hagia Sofia বিশ্বের অন্যতম পুরাতন Catholic Cathedral . মেহমেত বলেছিলেন, সেই মুহূর্ত তাঁকে জান্নাতের দ্বারপ্রান্তে হাজির করবার মতো এক স্বর্গীয় আবেশে আচ্ছন্ন করেছিল। তীব্রভাবে অনুভব করেছিলেন পরম করুণাময়ের অস্তিত্ব।
সেদিন সকালে বেশ হিম হিম হাওয়ায় দীর্ঘ কাতারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা শেষে অবশেষে আমি যখন এই মসজিদের মহলে এসে দাঁড়ালাম তখন অপার বিস্ময়ে অনুভব করলাম এক মহান স্থাপত্য, যার বিশালতা এবং চমৎকারিত্ব কতটা স্তব্ধ করে দিতে পারে। খ্রিষ্টীয় ভাস্কর্য, ধর্মীয় লিপিগুলোকে মেহমেত সমূলে ধ্বংস করেননি। আড়াল করেছেন মাত্র। দেয়ালগুলো কিছু অংশ প্লাস্টার করা এবং ভারী পর্দা দিয়ে আবৃত। পর্দার আচ্ছাদন থেকে মা মেরী এবং যিশুর বিশাল চিত্রের খানিকটা আঁচ করতে পেরেছিলাম। মসজিদের দেয়াল এবং গম্বুজ জুড়ে রয়েছে অপরূপ Arabic Calligraphy. ইসলামিক স্হাপত্যশিল্পের সৌকর্যে অভিভূত হয়েছি। এটি এমন একটি স্থান যে এখানে এসে দুদণ্ড বসে থাকতে ইচ্ছে করে। চুপচাপ এবং একাকী। এমন নির্মল আনন্দ বোধকরি সেদিনের সেরা প্রাপ্তি ছিল। তার অল্প কিছুই ধরতে সক্ষম হয়েছি লেন্সে এবং বাকিটুকু সারা জীবনের সম্বল হয়ে স্মৃতিতে রয়ে যাবে। Blue Mosque আমাকে সেভাবে বিহ্বল করতে পারেনি। পুনস্থাপনের জন্য অধিকাংশই আবৃত ছিল বলে খুব অল্পই দেখবার সুযোগ হয়েছিল।
মসজিদ থেকে বের হয়ে কয়েক পা হেঁটে Topkapi Palace। কিন্তু. এত বিশাল যে সেদিন ঘুরে শেষ করতে গেলে আরামের হবে না বলে ঠিক হলো পরদিন সকালে আসব আবার।
Topkapi Palace এ পৌঁছালাম বেশ সকাল সকাল। ঘুরঘুর করছে সব ধান্দাবাজ দালালরা। দরাদরি চলছে ট্যুরিস্টদের। যার যেমন ইচ্ছে সে তেমন দাম হাঁকছে। পনের জন ট্যুরিস্ট নিয়ে একটা মাঝারী দল পেয়ে গেলাম। মূল্যও বেশ মাঝারী। সময় নষ্ট না করে সামিল হলাম ওদের সাথে। বিশাল প্রধান ফটক অতিক্রম করতেই শুরু হলো মহলের পর মহল। যেহেতু প্রায় চারশ বছরের রাজত্বকালীন এই প্রাসাদ ও বিভিন্ন সুলতানের বসবাস সেহেতু প্রাচীন শিল্পকর্মের পাশাপাশি উনিশ শতকের আধুনিকতার ছোঁয়াও আছে।স্বর্নখচিত সিংহাসন, দরবার, পারিষদ বর্গের আসন সব কিছু কী জমজমাটই না ছিল। একটি রাজপ্রাসাদের শান শওকত দেখে প্রথমেই যে ভাবনাটা আসে তা হলো, আহা, কত সুখেই না দিন কেটেছে এদের! কিন্তু, আসলে কী তাই? আমার মনে হয়, অন্য আর সাধারণের চাইতে এদের বড় হয়ে ওঠা এবং জীবনযাপন অধিকতর যন্ত্রণার। টোপকাপির রাজপ্রাসাদ মহলের প্রতিটি ইটে বিজয়গাথার পাশাপাশি আছে রাজনীতি ও দূর্ধর্ষ যড়যন্ত্রের গল্প— যেন কান পাতলেই শোনা যাবে। হারেমের অন্দরমহলে সুলতান মেহমেতের প্রিয়তমা গুলবাহার যেন লিখেছে অনন্ত অপেক্ষা, বিরহ ও প্রেমের বন্দিশ।সারবিয়ান রাজকুমারী মারা, যাকে যুদ্ধশেষে সুলতান মুরাদ বন্দী করে এনেছিলেন আনাতোলিয়াতে, এবং পরবর্তীতে তিনিই মেহমেতের বিমাতা, যার স্নেহ সুলতান মেহমেতের কৈশোরকেই শুধু সমৃদ্ধই করেনি, তাঁর কূটনৈতিক বুদ্ধি এবং সহযোগীতায় একের পর এক সাম্রাজ্যবৃদ্ধি হয়েছিল সুলতান মেহমেতের। বন্ধুর মতো ছায়া দিয়ে গেছেন জীবনভর। মাত্র উনপঞ্চাশ বছরে সুলতান মেহমেতের জীবনাবসান ঘটে। তিনি ছিলেন Sultan of all Sultan, প্রাচ্যের জুলিয়াস সিজার।
দানিয়ূব থেকে নীলনদ পর্যন্ত বিস্তৃত অটোমান সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে দুর্বল থেকে দুর্বলতম হয়ে পড়ে একসময়। ইতিহাসবিদদের মতে, প্রথম মহাযুদ্ধে জার্মানদের সাথে সন্ধি একে অনিবার্য পতনের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। উন্মেষ হয় প্রজাতন্ত্রের। ১৯২২ সালে অটোমান সম্রাট চতুর্থ মেহমেত মসনদচ্যুত হন এবং তাকে নির্বাসন দেয়া হয়। কামাল আতাতুর্ক জন্ম দেন এক নতুন তুরস্কের। স্কুলের পাঠ্যে পড়েছিলাম কবি নজরুলের কবিতা, “কামাল পাশা”—
“ঐ ক্ষেপেছে পাগলী মায়ের দামাল ছেলে কামাল ভাই
অসুর-পুরে সোর উঠেছে জোরসে সামাল সামাল তাই।
কামাল তুনে কামাল কিয়া ভাই”
কনস্ট্যানটিনোপল বিজয়ের পর সুলতান মেহমেত এই শহরের নামকরণ করেন “ইস্তান্বুল”- গ্রীক উৎস থেকে উদ্ভুত এই শব্দের অর্থ হলো “The City”. এর বহু পরে ১৯৩০ সালে সরকারী কাগজে কলমে, ডাকটিকেটে “Istanbul” স্থান পায়। কৃষ্ণসাগর থেকে বেরিয়ে আসা বসফোরাস প্রণালীর এক পারে এশিয়ান ইস্তান্বুল যা এককালীন আনাতোলিয়া এবং অন্য পারে ইউরোপীয়ান ইস্তান্বুল যা এককালীন কনস্ট্যান্টিনোপল। ভুগোলে পড়েছি ইস্তান্বুলকে বলা হয় “City of Mosques”। এবার তা সচক্ষে দেখার সৌভাগ্য হলো। শহর জুড়ে আনাচে কানাচে দাঁড়িয়ে আছে নয়নাভিরাম সব মসজিদের গম্বুজ এবং মিনার।
একের পর এক পরাজয়ের সাথে সাথে অটোম্যান সাম্রাজ্য হারিয়েছে আধিপত্য, চাকচিক্য এবং সম্পদ। টোপকাপি প্রাসাদে তার চিহ্ন জলজ্যান্ত। চিহ্ন শহরের অবকাঠামোতে, শিক্ষা ব্যবস্হায়। তবে, আজ শুধু বিজয়ের গর্বটাই লেখা থাকুক আমার অভিজ্ঞতার অক্ষরে। পরাজয়ের কাহিনী তোলা থাকুক না হয়।
একটি সাম্রাজ্যের উত্থানের সাথে সাথে অন্য সাম্রাজ্যের পতন অনিবার্য। লেখা হয় বিজয়ের ইতিহাস নতুন পাতায়, নতুন মোড়কে।
তারিখঃ জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
মানস ভ্রমণ হয়ে গেল, সকাল সকাল