১. বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি পড়লে খুব বাড়িতে খিচুড়ি হয়, সন্ধ্যেয় তেলেভাজা, লঙ্কা ও মুড়ি হয়। এই সব হতে হতে বর্ষাটা না ফুরোতে দেখা যায় পরিবারে সকলেরই ভুঁড়ি হয়। ২. বেকারের কাজ […]
আমার কিছু মনখারাপের কাগজ ও আলপিন আমার কিছু মনখারাপের বাষ্প ধূসর দিন গভীর নিবিড় আকুলতার নিছক ব্যাকুলতা তোকেই দিলাম স্পর্শে পেলাম শান্ত কথকতা আমার কিছু মনখারাপের বান ভাসানোর সুখ আমার কিছু মনখারাপের তুমুল […]
লোডশেডিঙের ঠিক পরের শোরগোল থেমে গেলে আচমকা স্তব্ধতা নেমে আসে একত্রিশ বছর আগের দু-তিনটে সম্পর্ক দেওয়ালে ছায়া হয়ে গজিয়ে ওঠে বড় বড় ট্রাকের তোয়াক্কা না করে আড়াআড়ি হেঁটে যায় মাঝরাত শুনেছি উত্তর কলকাতার […]
তার ছবির দিকে তাকালেই নিসর্গ বিধুর রং ছড়িয়ে পড়ে পাতায় পাতায় এখন খেলা শেষের দিন একে একে ফিরে যাচ্ছে সবাই নিয়ে যাচ্ছে রোদ এবং জ্যোৎস্না আমরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে খুঁজে নিয়েছিলাম […]
অনায়াসের আঁশে আঁশে মিশে থাকে মিথ্যে আশ্বাস মৃদু সম্ভাবনার পিঠে সওয়ার বিপুল বিশ্বাস সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সমান এক প্রবল হিমালয় ঠিক নাকের নিচে নি:শ্বাসের আদলে খুব দিগ্বিদিক ছুটে চলা রেসের ঘোড়ার দিব্যি দেয়া প্রতিজ্ঞারা […]
ঝুঁকে পড়া ডালে থাকে নাশতা পাখির থাকে অবাধ হালুই ঘিরে, সৌরতীক্ষ্ণ গ্রাম, ছোট্ট মফস্বল, ফিরে আসে জামরুলগ্লেস; ছোট অলিগলি, বসন্ত বিছানো ভুঁই; স্বরলিপি নাকি টোলে স্বর্ণ-বর্ণমালা ওড়ে, নাগাড়ে পঠিত শ্লোকে? নারুলির মোড়ে এলে […]
জমাট শব্দের ঝাঁক দলছুট লীলাবতী তীরে এখনও রঙিন মেঘ পড়ন্ত বাতাসে নির্বাণ বিকেল যেন তামাপোড়া রোদ গেঁয়ো বালকের দল মেতেছে খেলায় যেমন দিনের শেষ ঝাঁপ দেয় সাঁঝের গভীরে রাতের মগ্নতার করে আয়োজন তোমার […]
জীবনের লেনদেন হিসেবের খাতায় টানাপোড়েন, ঠকিয়েছে মানুষ তবু দিইনি ফাঁকি, যখন চাঁদ গলেছে জ্যোৎস্না দিয়েছি তাকে সে দিয়েছে কেবলই অন্ধকার রাত্রি মানুষ বড়ো বেইমান শুধু আলোকেই চায় ছায়ার কথা কে বা মনে রাখে! […]
উইন্ডো ড্রেসিং দেখো জানালায় থরে থরে সাজান সওদা বিবিধ রঙিন কাপড়ে আধমোড়া, দু’চোখ দিয়ে রাক্ষসের মতো গেলো নিয়ন্ত্রণহীন উত্তেজনায় স্পর্শ করতে গেলেই জলজ্যান্ত, দৃশ্যমান কাচের দেয়ালে ঠেকে যায় হাত ওদিকে পিছোতে পিছোতে পিঠও […]
লেবু ফুলের গাছটা কেমন পুরোনো পঞ্জিকার মতো লালচে মলাটে যেন ছেঁড়া পাতা… কেউই পড়ে না আজকাল লেবু কুড়োনোর জন্য কেউ আসে না বুড়িয়েছে জাম গাছ, তেঁতুলের গাছ মাটি জানে কোথায় কতটা বীজ ছিটিয়ে রয়েছে […]
তোমাকে ভাবি আমি এমন দাবি আমি করিনি সহৃদয় আমাকে ভাবো তুমি এমন আবদারও কখনো নয় নয় তবুও কেন এত শিশির ঘাসে ঘাসে জ্বলছে সারা মাঘ জ্বলছে কেন তারা গুহার ভেতর যেন লুকিয়ে আছে বাঘ […]
শান্তিনিকেতনে যাওয়ার কথা ছিল। সোনাঝুরির হাটে বিকেল, বাউল গান আমাদের যৌথ জীবন ঘাত প্রতিঘাত থেকে পালিয়ে এসেছে এইখানে খোয়াইয়ের কাছে গিয়ে চুপ করে বসি এক আকাশ তারা মৌনতা, সুগন্ধি আঁচল হাতের পাতায় জমে ছিল […]
মূল কবিতা – সাহির লুধিয়ানভি তাজ তোমার জন্য এক প্রেমের দ্যোতকই হোক এমন মনোরম স্হান সমাদৃত যতই হোক আমার প্রিয়তমা, অন্য কোথাও দেখা কোরো তুমি! রাজদরবারে অভাবীরা কবে অভিগামী […]
রবিবার থেকে একটা পাখি উড়ে যায় খসে পড়া পালক তুলতে গিয়ে সারা সপ্তাহের কাগজের এলোমেলো শুয়ে থাকার ভঙ্গি ভালো লাগে, সরকারি প্রকল্পের ফাঁকফোকরে ঢুকে পড়েছে শেষরাতের বৃষ্টি আর আরশোলা বারান্দার রেলিংয়ে ভেজা কাগজের পাতা […]
সমাজের ছুরি হতে দূরে দূরে থেকে গিয়ে আমার গানেরা জাগে বাঁশরি আলোর নিচে, উজ্জ্বলতর সব চঞ্চল সুরে; হৃদয়ে বেঞ্চি পেতে যাকেই বসতে বলি সে-ই রেখে যায় ছোবলের দাগ, কৃষ্ণপক্ষ রাত! যেভাবে হাঁটছো একা, সঙ্ঘেরা […]
জলে যে রেখেছে পা, তুমি তার সাথে কথা বলো। জলে যে রেখেছে পা, তুমি তার কাছে শিখেছো নানান সাঁতার। জলের তারতম্য শিখতে হলে তুমি তার কাছে যাও, জলের অশ্রুপাত দেখতে হলে তুমি তার […]
হাঁসের ছানার মতো নরম প্রাতঃরোদ পড়ে থাকা আড়াআড়ি কিছুক্ষণ, এরকম আমার একখানা গাছবাঁধানো ঘাট ছিলো পুকুরের ছাতে মেঘ আর চাঁদ আর তারার ত্রিমুখী প্রণয়ের দিনরাতগুলো ছিলো হাঁসের পিছু পিছু বৃষ্টির চই চই ডাক […]
অনেক মানুষ এসেছিল অনেক গল্পের কলরবে মুখরিত চারিদিক দুই একজন খিস্তি করে, কেউ বসে থাকে নির্বাক নিশ্চুপ কেউ কান্না লুকোয় নীরবে কারো হাসি দিগন্ত কাঁপায় কারো নাকছাবি জুড়ে জল চিকচিক কারো ভেপে কত লম্বা […]
১. যুদ্ধের প্রস্তুতি সবই। আমি টের পাই শ্রাবণ-মেঘের রূপে শ্যেনচক্ষু যেন আবাবিল আরবাহা হস্তিযূথে অতর্কিতে চুপে দেবে হানা; ২. পাহাড়ের শক্ত করোটি ঘিরে বাষ্প যেন বিধবার নিরশ্রু বিলাপ; ৩. কীটের কামড় খেয়ে, […]
অকারণ খুশি হওয়ার বালখিল্য অভ্যাস ছেড়ে এসেছি সবাই সাক্ষী, শুধু সুপ্ত আগ্নেয়গিরির খবর রয়েছে গোপনে। অকারণ আমিত্ব ছেড়েছি কর্মক্ষেত্র জানে, শুধু জানে না স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব অজান্তেই আসন খুঁজে নেয়। অকারণ আবেগ মুঠোবন্দী কারাগারে প্রচণ্ড […]
গলির মুখে লাশটা পড়েছিল টগবগে যুবক, বুকের বাঁ পাশ দিয়ে তখনও কিছু স্বপ্ন উঁকি মারছে, প্রেমিকার মুখ কুকুরেরা ঘিরে ধরে সমবেদনা জানিয়ে শুঁকে শুঁকে চুক চুক করে গেছে আগেই জানলায় দু’একটা বক, লম্বা […]
এক আইবুড়ো মেয়ের কোপনস্বভাব হওয়ার পথে অনেক মিলনহীন খরদিন পেরিয়ে গেছে আয়নার সামনে দাঁড়ালে কখনো কখনো এক আততায়ীর আভাস পাওয়া যায় ফসল পাকার আগের মাস থেকে একটা সাদা বক ভোরের মুখে ক্ষেত আগলে দাঁড়িয়ে […]
বর্ষা হঠাৎ এসে ভাদরে গেল বেতাল মতোন ওরই মাঝে বানে খেয়েছে নদীর পাড় আঙিনার আধখান যেটুকু আছে দেখি নাই সেদিন জোয়ার ছিল যে বিহানকালে— না দেখার খচখচ মনে, তবুও আলগোছে নতুন টিনের বান খুলি। […]
জানালায় টোকা দেয় মেঘ নেমে আসে আকাশের পাটাতন পা ঝুলিয়ে বসে আছে বিজলি ; গর্জনে তেড়ে আসে বৃষ্টি মিহিদানা জল বুকের কোটরে জমে কিছু স্মৃতি ভাসে মনে পড়ে কাগজের নৌকো ভেসে গিয়েছিল জলে […]
অনেকদিন পর বাড়িটায় এলাম সব তেমনই আছে মানুষগুলোও একইরকম তবে ভালোবাসা জিনিসটার আগের মতই বড় অভাব। দেখা নিয়ে এ ঘরে আমাকে সেদিন যারা ওসব বলেছিল তারা সবাই ঘর ছেড়ে চলে গেছে আমিই […]
এই যে অমিয়ধারা ঝমঝম বাজে বৃষ্টির নূপুর কে যায় বরষার সফেদ শাড়ি পরে? ব্যস্ত পায়ে রিনিকঝিনিক তালে উড়িয়ে কুয়াশার আঁচল হাওয়ায় দুলিয়ে? কে যায় ওই স্রোতঃস্বিনী ধারা জলজ জীবনে জাগিয়ে প্রাণের সাড়া বুকের […]
তোমার সাথে কাটানো একটা স্মৃতি প্রতিদিন একই ভাবে আসে বর্ষণমুখর সায়াহ্ন দুজনের একটি ছাতা আধভেজা পাশাপাশি হাঁটা; মগ্ন হয়ে দেখা পথশিশুদের জীবন কেউ কেউ কষ্ট ভুলে বৃষ্টিতে হুটোপুটি কেউ বা ব্যস্ত বৃষ্টিস্নাত বাতাসের […]
আমাকে কি একাই খোঁজো তুমি? লোকালয়ে, শহরের অলিগলিতে, বাসস্ট্যান্ডে, ট্রেন স্টেশনে আমি বুঝি খুঁজিনি তোমায়? ভরা বর্ষার পানে চেয়ে দেখ যেটুকু বৃষ্টির শব্দ, সব কান্নার আওয়াজ বর্ষণের ফোঁটার স্পর্শে খুঁজেছি বহুবার। একাই খোঁজো […]
ঝুমকোটা হারিয়ে গেছে তুমি বললে কানের সাজে ঝুমকো নয় আজ থেকে নক্ষত্র বসবে, বললেম হীরে? বললে না, দূর দূর বহু দূর থেকে ছুটে আসা রথ আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযোগহীন একমাত্র খামোশী কী? কতো কী […]
আষাঢ়ে বৃষ্টির মত নাছোড় প্রেম নিয়ে মাঘের শীতে গ্রীষ্মের উত্তাপ ছড়িও না–ও তাপ জ্বলে, জ্বালায় না। শ্রাবণের রোদন শুনে কার্তিকী নবান্নের ধানের গোলা ভরো না–ওতে পায়েসের সুঘ্রাণ, ভাতের আবেশ মেলে না। পৌষের পিঠের রসে […]
এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছে আর তোমার ভিতর শব্দ করে আছড়ে পড়ছে গাছেরা এর কিছুই আমাকে জাগাতে যথেষ্ট নয় জেনে এক কাঠবিড়ালির হাঁটার আওয়াজ নিয়ে চোখে আটকায় নিকট অতীত। এই যে জন্ম ও জন্মতিথির তারা, […]
ফুল ফুটেছে দিগন্ত তক এদিক ওদিক বনে, গান জেগেছে প্রাণ জেগেছে মনের কোণে কোণে! ঋতুরাজের আগমনে প্রাণের প্রদীপ জ্বলে হৃদয়খানা একটু একটু নবীন সুরে গলে! চারিদিকেই নিষ্ঠুরতা আকাশ বাতাস ভরা, নিষ্ঠুরতার ছবিগুলি চোখের থেকে সরা। […]
আহ্বানটুকু রেখে ডুবে গেল মাস্তুল আরশির নদীতীরে একা এক ভোর কলুষের ঘাট ছুঁয়ে ভেসে চলে ভুল রাত এসে কড়া নাড়ে বুকের ভেতর এখনো যাওয়া যায়। সাগরের ডাক সোনালী রেলিংয়ে ভেজা স্মৃতি মেলা টুকিটাকি হাহাকার […]
ক্যাঙারুর দল পার হয়ে গেছে দিগন্ত আর চুরমার করেছ পুরোনো স্কুল এরপরেও যদি ভাবো কিছু শোকপ্রস্তাব উঠে আসতে পারে- নেই দাঁতগুলো বন্ধ করে দেখো বয়েই চলেছ বোবা একতারা কিছু অথবা ন্যুব্জ গিটার আর ভাব […]
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পর ভাঙা পানপাত্রগুলো বিক্ষিপ্ত পড়ে আছে, দোয়াতের সমস্ত কালি শুষে নিয়ে মৃতপ্রায় কলমের খোঁচায় অলঙ্ঘ্য কিছু রক্তপাত, সন্ধ্যের আলো জ্বলে উঠলে আড়মোড়া ভেঙে স্খলিত স্বরের রাত্রিযাপন ফিরে এসে দেখেছি জনহীন বাড়ি, […]
অবনমন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সুতো যেভাবে গোধূলি নদীর বুকে কোনো নিঃশব্দ চর তলিয়ে যাচ্ছে, ডুবে যাচ্ছে অন্ধকারে আর এই অন্ধকার কাকে চায়- কার কাছে নিগূঢ় হাত পাতে কার জন্য বসে থাকে হাহাকারের মতো সে […]
নিজের কথা লিখতে গেলে মমির তাপমাত্রা ভর করে আসে কলমে একটা হাইরাইজ ঘুড়ি, একটা শ্যাওলাবর্ণ মেঘ, একটা কবিতার মধ্যে গ্রাম দেখো মমি হতে হতে হৃদয়ে বিরান আর এতসব আত্মপ্রবঞ্চনায় থিতু হতে হতে রাষ্ট্রের তোতাপাখি […]
এই যে হলুদ ক্ষেতের ফুল ভক্তিমূলক গান আত্মনূরের রূপ এর সবকিছু অছিলা অন্বেষণ এই যে ইশকের ব্যথায় ব্যথিত তুমি তাপস জ্ঞানে তালাশ করো মন শরিকানা ভাগাভাগি মাশুকের দিদার ছাড়া কিছু তো নও […]
চোখের সমস্যা চশমা খুললেই শুধু জল আর জল কবি ডাক্তার দেখাতে গেছেন সব দেখে পরিদর্শক বলছেন ”আপনি যে সন্তুষ্টি নিয়ে প্রকৃতিকে দেখেন– চোখদুটো তো যাবেই” ওষুধে সব হয় না সময়ের একলার […]
রেললাইনের উপর হেঁটে যেতে যেতে বলেছিলো সুতপা, সময় করে একদিন ডেকে নিস সবুজ ট্রেনে করে সেই কবে সুতপা চলে গেছে, কী এক বিষণ্ণ সকাল ছিলো! একদিন আমিও মেট্রোর রাজপথে একা হলাম তারপর হুটহাট […]
যদি ভুল ভাঙে তবে জেনে রেখো এ জীবন নির্বাসনের অনেক বছর হলো নিজের সাথেই বসবাস প্রিয় মানুষকে সহ্য করা বড়ো দুরূহ কাজ প্রাপ্তির আগের তীব্র আকাঙ্ক্ষার মতো অনেক ইচ্ছে কাচপোকা হয়ে আত্মাহুতি দেয় […]
ছায়া ভেঙে যায়, জল খোঁজে জল মায়ার সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে কে ছুঁয়েছে জলের অধর? সমানুপাতিক এই বেঁচে থাকা প্রতিসরণে বেঁকেছ তুমি কত? প্রতিফলিত রোদের ছায়ায় উড়ে গেছে ছোটো পাখি চন্দনা মুখোমুখি […]
এক একটা শিমুল বৃক্ষে ফেলে এসেছে সুতোর সোনালি শৈশব, তার জমাট তুলোর পরিবার এখন ক্ষুধার্ত সুঁইয়ের আহবানে সুতো বিরামহীন ছুটছে বস্ত্র সভ্যতার পথে, সেলাইকলের যুগে অথচ রঙিন সুতোর বাইনে আড়াল করে রাখে মানুষ সকল […]
পাতা ঝ’রে ঝ’রে উদ্যান যখন গালিচার আবর্তে প্রহসন দৃশ্য হয়ে উঠেছে সখ্যের চাপা পড়া অতীত হাঁসফাঁস আকুলি বিকুলি করে স্মৃতি হাতড়াচ্ছে আরাধ্য নৈকট্যের সংজ্ঞা সাত-সতেরো আলাপের ডালি মেলে আজ বার বার বলে উঠতে […]
জয়পাল কুমার রোজ বসে থাকে বটগাছতলায় দূরে সাঁঝমাখা গাছে বিন্দু বিন্দু কুয়াশা মেখে উড়ে যায় আলোপাখি আমরা সবাই আঁধারের দিকে হেঁটে চলি ভালোবাসায় ফিরব বলে অনামিকা বলেছিল শুকতারা জ্বলে উঠলে কারিব্যু হরিণেরা যূথবদ্ধ আবার […]
সেই সব শিখর দেশের সমুন্নত শাখারা প্রতিফলিত হয় না যতটা আলগোছে টুকুস টাকুস করে কবিতা কবিতা খেলা যায়। একদা মুষ্টিতে রেখেছিলাম ঝাঁ ঝাঁ সময় মুঠো খুলে দেখি সময় রোদ্দুর সব শেষ। এক অন্ধকার চেপে […]
মনের ভেতরের শখটাকে মেরে ফেলতে নেই বয়সের দোহাই দিয়ে গলা টিপতে হয় না নিরপরাধ ইচ্ছের যদি কারও ঘর উজাড় না হয়, যদি অবক্ষয় না নেমে আসে সমাজে তবে স্বপ্নের ডানাগুলো উড়তে চাইলে ক্ষতি কী […]
আমার অসুখের কথা শুনলে তুমি আসবে? এই তো সেদিন গলির মুখে ময়ূরপঙ্খী রিকশা থেকে নেমে পায়ে পায়ে পেরিয়ে গেলে পথ আসবে? আমার অসুখ হয়েছে জেনে? বিবর্ণ জানলার পর্দা উড়িয়ে রাতের আকাশ হয়ে আসবে? […]
গদ্যে নিজেকে জাহির করতে গেলে আঙুলগুলো নড়বড়ে হয়ে যায় পদ্যের বিমূর্ততা ঢাল হয়ে এসে সামনে দাঁড়ায়, আমি সাময়িক নিরাপদ বোধ করি কাব্য সম্মেলনের শেষে ফাঁকা মঞ্চে বিড়বিড় করতে থাকা কয়েকটা কবিতা পড়ে ছিল, […]
আরেকবার তাকাও দেখো নতমুখী আলো ঘিরেছে অন্তর তোমার অন্দরে বাজে আঁধারের জলসিক্ত অচেনা পায়েল এই অন্ধকার জানি সেই নির্জনতা ; পতনোন্মুখ কবিতা! একটু হেসেছি আধফোটা ফুল আমি; হেরে গিয়ে জিতে গেছি নীরবতার হরফে […]
একা আমি বাঁচতে শিখে গেছি প্রিয়তম মৃত্যু একান্ত প্রেম অপ্রেম নির্জন শরীর জুড়ে মৃত্যুকে পিছনে ফেলে সমুদ্রকে টেনে নেয় বুকে, নিঃসঙ্গ তিলোত্তমা ধ্রুপদি নৃত্যে পদ্ম ফোটায় মারমেইড সাগর জলে তোমার চোখের ক্রোধ পুড়িয়ে দেয় […]
এটা খুবই আশ্চর্য কেন তুমি পৃথিবী ছেড়ে যেতে চাও তুমি তো জানো দুঃস্বপ্নের রাতের পর ভোর হয় সূর্যের বিকিরণ আলোকিত করে চারিদিক মেঘ থেকে বৃষ্টি হবেই আর বৃষ্টির পর রোদ এটাই স্বাভাবিক কেন উৎকণ্ঠা […]
হলদে চোখের লোকটা হরেক রকম আংটি ফেরি করছিলো হাত পেতে মোহর চেয়ে গছিয়ে দিলো উজ্জ্বল পাথর বসানো, চোখ ধাঁধানো জড়োয়া; ছুঁড়ে ফেলে বলেছি, ডানা চাই। লোকটা টুকটুকে আপেল এগিয়ে দিলো ডানা নেই, এই নাও […]
ছন্দপতন জীবন আর ভালো লাগে না ছন্দেবন্ধে আর কতকাল! ছাপাখানার মতোই জীবন আমার সংশোধনে বহুবার, ছাপাই সংযত হয়ে সাবধানে, শতবার ভুলে ভরা জীবন কতবার খেয়ালে খেয়ালে রেখেছি কমা, সেমিকোলন, দাঁড়ি আর আশ্চর্যবোধক চিহ্ন, তারপরও […]
হয়তো আবার দেখা হবে তেরোশ’ পঞ্চাশ কোটি বছর পরে তোমার টেলিস্কোপে কল্পনার স্ফুলিঙ্গ হয়ে অথবা হয়তো একটি রহস্যময় লাইন টেনে চুপচাপ দেখব দুজন দুজন’কে অথবা হয়তো সূর্যের আলোয়, আমি রংধনুর রঙে মিশে যাব অথবা […]
ক্লান্তির কবিতা আর লিখব না কেউ শরীরের তৃষ্ণা আছে , অথচ জলের নিচে আছি হৃদয়ের জিজ্ঞাসা রয়েছে, কিন্তু পাথর বেঁধেছি আমরা বুকে ভ্রান্তির ছবিও আর শিখব না কেউ দুডানায় এসে বসবে ভালোবাসা আজ বিপুল আদর […]
আরও কিছুটা সময় চেয়ে নিলাম। এইসব প্রবাহ থেকে দূরে থাকবার মতো নিজস্ব বনে, একলা হওয়ার মতো কিছুটা সময় বহুকাল ভিড়ের ভিতরে ঘুরে কেটে গেছে দিন এখন শান্ত নদী ডাকে ফেলে আসা গ্রাম, ছায়া […]
শরীরের ভেতর একটা গাছ বেড়ে উঠছে ক্রমশ। দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি ঠায়- চুপচাপ, সঙ্গীহীন। যে আলোটুকু পথ ভুলে ছুঁয়ে যায়, ঠুকরে খাই তাকে। হাওয়া দিলে উড়ে যেতে পারি বহুদূর। ফিরে এলে, আসলে কোথাও […]
একদিন অনুচ্চারিত বিকেলের প্রত্যাশায় আমার হৃদয়কে অনার্য করে গেছো কোনো এক বৈশাখি উঠোনে ঠনঠনে রোদ ভেঙে আচানক কাঁচবন্দি মেঘে; আমার দেখা হয়নি তারে আরও তারে হৃদয় হতে দূরে চলে যায় যে তৃষ্ণার গোলকধাঁধায় ঘুরে […]
তুমি এক ধারাবিবরণী হয়ে থেকে গেছো সোনাপাতি ফুলে, কেউ ডাকে চন্দ্রপ্রভা! বারো মাস পাতা ঝরে পড়ে থাকে এইখানটায় মসজিদ পথে। ভূষিজলে মুখ ডোবানো গাভীর মতন চোখ তুলে তাকায় বিকাল; কী যে মমতা মহাশূন্যের ভিতর […]
শব্দহীন শব্দহীন শব্দহীন প্রচণ্ড বিস্ফোরণে বেরিয়ে এল ঝর্না পাহাড়ের বুক থেকে কী বার্তা বহন করে অবিরত জল কেউ কিছু বলবে না তোমাকে খুশি করার জন্য নি:শব্দেও ফুটবে না ফুল নিজের আঙুলের ভাষাও অচেনা মনে […]
আমি প্রমিস করি নোটবুকের পাতায় এরপর ভুলে যাই কতশত প্রমিস! ঠিকঠাক ঘুমোবো, রোজ সকালে সূর্যের সাথে দেখা করতে দৌড়ে যাবো দিগন্তে, মেঘের সাথে কোমর বেঁধে নেমে যাবো নদীতে, জলতরঙ্গে লিখে দেবো অর্ধশত অসমাপ্ত স্বপ্ন […]
শূন্যস্থান পূরণের জন্য কতটা ডুব দেওয়া যায়! নির্জন বালিয়াড়ি থেকে ছেঁড়া সরোদ ভেসে আসে বিস্তীর্ণ মরীচিকা হয়ে উঠেছে স্পষ্টতর, হইচই, আয়োজন, ভোজ থামানোর সুযোগ নেই আর শৈশবের দৈত্যের স্বপ্ন থেকে বাঁচতে ধূর্ত শ্বাপদের সাহচর্য […]
সময় থেমে আছে, এখন জরাগ্রস্থ সময়- হাতের চেটো যেন রঙচটা মলাট দরজায় টোকা দেয় গল্পের প্লট অথচ বুক পকেটে পুরনো গল্পরা নড়ে। কালিন্দীতে জমেছে পলি হাওয়ায় কবিতার পংক্তি ওড়ে। চর জেগে থাকে কুয়াশার মতো […]
বিচ্ছেদে প্রেমিক আর ঝরে পড়া পাতা… দু’জনেরই যাপনদৈর্ঘ্যে এক নিজস্ব দিনবিধি আছে, ওদের ঘন্টা মিনিট দিন মাস বছর যুগ ইত্যাদি কেবল সময়ের একক সমূহ; আসলে আহ্নিকতা মননপটে চেনা মুখ, চেনা সময় ইত্যাদির ক্রমক্ষীণ গাড়ত্বের […]
“অমল ধবল পালে লেগেছে মন্দ মধুর হাওয়া”— তিনবার মুখস্থ লিখে জানলা খুলি। বাইরে তাকাই। দেখি, সেই পালে লেগে আছে কালো কালো ছোপ। তবে কি ভুল চশমায় দেখেছি তোমায় এতকাল? কাতর শরৎ হাওয়া বাধা পায়, […]
ভোরের ফিকে অন্ধকার ফিসফিসিয়ে বলেছিল– জানো তো, ওর দুটো ডানা আছে! সেই থেকে পাখিকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় শহরতলির এই ঘর বসে বসে শুনি — হাওয়া ঘুরে ঘুরে কেবলই ভুল বকছে রাত গড়িয়ে যায়, […]
কার কাছে প্রত্যাশা করি? কে চিনেছে রক্তের স্রোতে দুলে ওঠে চতুর্দশ ভুবন আর সপ্ত পাতাল? পৃথিবীর শেষ সীমানায় আলোকিত আপেল বাগান কে দেখেছে? কে দেখেছে করতলে মৃত্যুর ডানা মুড়ে বসা? কার কাছে প্রত্যাশা করি? কে […]
মৃত পাখিদের শরীর ঘিরে রাখতাম ঝাঁজালো মশলায়- এমন যুদ্ধকালের মানুষ আমি! মৃত বকুলের মালায় গেঁথে পয়ার প্রেমের মতো সুগন্ধি আমি। তীব্র যোনির মুখে বাস করা পশমে উপশম আমাদের মোহ এ কালের আলমিরায় ডিম পাড়ে […]
অপরাহ্ন পেরিয়ে যাওয়ার পর কেবল শব্দগুলো পড়ে থাকে প্রায় নিভন্ত উনুনে, মশারীর ভেতরে, পার্শ্ববর্তী জলা জঙ্গলে শব্দরা মাঝরাত পর্যন্ত সশ্লেষে জেগে থাকে কিছু ঠিকানাহীন, আজন্ম পরাশ্রয়ী বাকিরা দীর্ঘ ছায়া তৈরী করে কানাগলি ছাড়িয়ে চলে […]
বসে আছে একটা কেদারা যুগের শব্দরা আসে; বসে মুখোমুখি পঙক্তিটা বাঙময় হতে চায় কিছু অনুভব নতমুখী আগেও শুনেছি এই গল্প তরুণী কেমন করে হয়েছে কবিতা? কোন আবেগের ভস্ম থেকে ওড়ে এলোচুলে ছাই কে তাকে […]
একদিন উইকেন্ডে এসে মানুষের মগজ চিবাবে শয়তান। পত্রিকায় ফলাও করে হেলে পড়বে বহুগামিনী প্রেমিকার ভীড়। ধীরে, অতি ধীরে যাবে প্রবৃত্তি গুহার যুগে ফিরে, আগুনে উদ্বেল হবে লাস ভেগাস, কৌশলে ডান হাত লুকিয়ে রাখবে মানুষ; […]
কবিতা লিখতে গেলে আলো মরে আসে শব্দের গায়ে ছায়া পড়ে অপশব্দের মরা চাল বাছতে গিয়ে করকর করে ওঠে চোখ একটু বাইরে বেরোনো ভালো এখনও ইতস্তত আলো লেগে রয়েছে দেয়ালে প্রতি অনুচ্ছেদে গর্ত খুঁড়েছে যত […]
আহারে উঠান আমার, চাইরদিকে খিলা, দেখার বাসনা আছিলো, ময়ূরীর নাচ, উইড়া বসবো আইসা কান্ধে, বুকে হাতে। নাড়ান দিয়া যাইবো কলিজার গহিনে কোনহানে। আন্ধাইর রাইতে ম্যাঘ ফুইরা বারায় চান, বুকের ভিতর ধরফর করে, তাজ্জব হই,এই […]
তোমার তিনশত পঁয়ষট্টি দিনের একটা গোটা দিন আমার জন্য রেখো, রাখবে তো? খুব অল্পই চাওয়া, দু’টাকার বাদাম ভাজা একটা সোনালি বিকেল খোঁপায় রক্তজবা আকাশের রঙের সাথে মিলিয়ে অল্প দামের একটা তাঁতের শাড়ি আর গোটা একটা […]
শীতের শুষ্কতা শেষ করে যখন বসন্ত দিনের প্রস্তুতি শুরু হবে তারপর আসবে বৈশাখ আমরা দু’জন বসে থাকব অনন্তকাল নূতনের প্রতীক্ষায়… মাঘের শেষে ফাগুনের জন্য একটা কোকিল ডাকা পূর্ণ বসন্তের জন্য একটা লাল কৃষ্ণচূড়া ভোরের […]
কষ্ট হেঁটে যায়, থেমে যায় বার বার। তার কোনো ঠিকানা নেই কিন্তু যখনই তার চোখে পড়ে করিডোরের সোনা মেঘ রোদ ছড়িয়ে গেছে– কিংবা কারো আয়নায় চোখ ডুবে গেছে অবিরাম তখনই সে বৃষ্টির সাথে ঝরে গেছে […]
শিবির গেড়েছো এই ভয়াল জাঙালে কণ্টকে কণ্টক গাড়ি’ নিঙাড়ি নিঙাড়ি এই বল্কলশাড়ি যেতে হবে দূর নদীকূলে একা একা, কত দূর জানত জানত নহি জানো না জানো না কানাতটা একটু তুলে দেখেছে এ দীনা […]
১. পাঁচটি ‘আমি’-কে আমি বয়ে চলি শরীরে আমার জিভে স্বাদ, কানে বাক্য, ত্বকে ত্র্যহস্পর্শ-শিহরণ শরীরী গন্ধক চায়, আর চায় মুখ দরশন পায় না কিছুই তবু। ভাণ্ড-ভাণ্ড না-পাওয়াকে পায় ২. অপার করুণাবশে অগতির গতি প্রাণনাথ শূন্য ডালা থরে-থরে শূন্য […]
আমাদের নিজস্ব অরণ্যের ভেতর যে সব পথ মাঝেমাঝে তোমার সঙ্গে সেখানে দেখা হবে, আমাদের যৌথ শিকার পায়ে হেঁটে চলে যাবে সবুজ ওই পাহাড়ের দিকে, যেখানে রাত্রি এসে বিছিয়েছে ক্যাম্প, আগুনের উষ্ণ প্রহর, আমাদের অক্ষরে […]
বড় সন্তর্পণে চলে গেলে যখন জ্যোৎস্না মাখতে কখনো বারান্দায় বসিনি শনশনে হাওয়ায় মেঘ কেটে গেছে দুপুর জুড়ে একটা বনসাই একদৃষ্টে চেয়ে থাকে, হেসে ওঠে কিনা বুঝি না অনিচ্ছায় শুনতে পাই বড় রাস্তা দিয়ে […]
ফোনটা অনেকক্ষণ ধরে বাজছে, ঘরে কেউ নেই। যারা ছিল, তারা চলে গিয়েছে। যারা আছে, তারা ব্যস্ততা আয়নার মুঠো ছবিতে মুখ ঢাকা, তবে শরীরটা অনেকটাই অনাবৃত। চিন্তার অগভীরতা খসে পড়ছে হিসাব গভীর মাখা রোজকার নাটকে। […]
হয়ত ওরা এখনও গাছের ডাল আঁকড়ে দূর থেকে ঠিক ফুলের মতো যেন কৃষ্ণচূড়ার ঔদ্ধত্য কাছে গেলে বোঝা যায় ভুল ছিলো ক্লান্ত বেগুনীরঙা বেলুনগুলো উৎসব ওদের ছেড়ে গেছে কতো ভ্রমে ডুবে আছে অসত্যবিলাসী […]
ইনলাইটেন ঘাতিকা নেচে নেচে ঘেমে যায় ইজম ঢলনে, এই বনোজাত ইনসমনিয়ার আলপনা আঁকে এক উদ্যানপালক নিরালায়। আর, এখানে তুমি আজ উদ্বেজয়ীতার মতো, তাড়াতড়ি, আলাভোলা। তোমার পড়শিরাও জেনে গেছে কেন জলছত্রি জারজার। কেন রূপের […]
চলে যাওয়ার কোনো স্বরলিপি হয় না এক একটা পথ অদৃশ্য হলে অন্ধ হয় সময়। এক একটা সময়ে এক একটা বিবর্তনের প্রয়োজন হয় যদিও প্রত্যেক বিবর্তনের একটি নির্দিষ্ট স্বরলিপি থাকে। প্রত্যেক স্বরলিপিরও থাকে […]
তখন ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির ভেতরে নেমে আসছিল গল্পেরা। গল্পের ভেতরে একটা ঘুমিয়ে থাকা দুপুর, দুপুরের কোলে থোকা থোকা মেঘ, আর মেঘে ভাসমান জলকণাগুলো উন্মুখ হয়ে বসে আছে চিঠি পাবার অপেক্ষায়। ঠিক কতগুলো শব্দ […]
অত রাত্রে আমি কোনো কবিতা লিখিনি শেয়াল ডেকেছি আর ডেকেছি কুকুর গভীর নিদ্রা ফেলে ধড়ফড় উঠে দাঁড়িয়েছ “কই চোর? ডাকাত কোথায়? কোনদিকে পালাল লুঠেরা!” আমি কী উত্তর দেব, হাওয়াকেও মুখ ভেঙিয়েছি। সেই রাত্রে […]
যেসব ম্যাজিক লণ্ঠনের নীচে নেমে যেত পাকদণ্ডী আর মোরগের ঝুঁটির মতো দিন সে সব জড়ো করতে করতে একটা বন্দরে এসে পৌঁছালাম ঘুমন্ত ঘড়ির গা ঘেঁষে একটা ঘণ্টা বেজে উঠল আস্তাবল থেকে বেরিয়ে এল […]
ছেঁড়া ছেঁড়া কিছু অন্ধকার স্হাণুর মতো, শ্রাবণসিক্ত ঝোড়ো হাওয়া দফায় দফায় খানিক ফিকে করেছে তাকে, নিথরতা আজও ভাষা পায়নি সম্পূর্ণ শুধু চলমান যথাসম্ভব, সময়ের সাযুজ্যে স্বপ্নে এখনও দেখি তাকে ঘন ঘন আসে তার […]
বৃষ্টি থেমে গেছে বিকেলের সাথে বয়ে যাই রাতে রাতও বিগত হয়। এতদিন মন বহুকষ্টে দাবিয়ে রেখেছিল সমুদ্র জ্বর আজ সে ভীষণ জেদি মনে রাখবে গোধূলির লাল… একটা ছোট্ট দুপুর তাই নিয়ে গেল শহরের এক […]
“ভাল কিছু থাকলে খবর দিও” রিকশা ছাড়ার আগে শেষবার বাড়িটাকে দেখি। দালাল অমিয় হাত নাড়ে, পেছনে ফ্যাকাসে হলুদ বাড়িটা যেন মুখ নিচু করে সন্ধের পর্দা টেনে দেয়। এই নিয়ে চারটে হলো এমাসেই। প্রথম বাড়িটা […]
হয়ত ফসল থেকে দূরে সরে যাচ্ছে শরীর হয়ত শরীরের বাঁধে বাঁধে ধরেছে ঘুণ কী এক পতঙ্গ ভোঁ ভোঁ করে সারাক্ষণ এর থেকে বৃষ্টি ভালো অনিকেত বৃষ্টি ঝাপসা জানলায় খেলা করা অতীত ভেজা কৃষ্ণচুড়া […]
দীর্ঘ আবছায়া গাথা পার হয়ে যায় বৃদ্ধ মথ বালির কঙ্কাল জেগে আছে নিস্পৃহ জলের নীচে জিজ্ঞাসায়। কতটা আগুন জমা থাকে ঐশ্বর্যপালনের সম্মোহে! নিরাকার ব্রহ্মের মত খোয়াইশের কিনারের কাছে মুহূর্তের ঋণ রেখে যায় পূর্বাশ্রম স্মৃতি, […]
আজ দ্বিমনে বরষা ঝরায় বাতাস টোপর খুলে স্যালুট করছে আকাশ? মস্ত আকাশ, বুনছে আয়ুর নিদান? অসুখে বন, মুহুর্মুহু, বিরান! অসুখে মন, রাত্রি কি ভোর, বিষম এর ভিতরেই বৃষ্টি ধরছে কলম গাঙ ভরে যায়, […]
আমার শরীরে বুনো ঘ্রাণ ফুলের রেণুর আলাপন সোঁদালি মাটিতে ঠিকানা খুঁজতে হয়রান অস্তিত্ব অস্তিত্বের সবটুকু দলা জমাট রাতের মতো পাশেই খাম্বাটা – জড়িয়ে ধরেছি শক্ত হাতে একটা হাইফেন – অযাচিত যোগসূত্র রচনায় […]
আমার ভিতরে ও বাইরে তোমার অবাধ যাতায়াত। আরও অনায়াস হয়ে গেছে বোধহয় আমার প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়েই… দুরন্ত চপলা যখন স্থিতধী, অবাক হয়ে তোমাকে দেখা ছাড়া তার গতি নেই। ঋজু ব্যক্তিত্ব আর সময় মেপে চলা দিনের […]
ব্ল্যাক কফি উইদাউট সুগার স্ন্যাকসের সাথে ক্যাচাপ একটা সিংগেল স্যানডি হলেও মন্দ হয়না… খুব সিম্পল কিছু খাবার। অথবা বুফেতে অঢেল খাবার খেয়ে আয়েশের ঢেকুর। কিংবা মনে চাইলে চাইনিজ-থাই য খ ন যা ইচ্ছে হজম […]
এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখি আমি, স্বপ্ন ঠিক নয় যেন এক ঘোর, জেগে থেকে তলিয়ে যাওয়া। দেখি এক লম্বা করিডোরে দাঁড়িয়ে আছি সেই প্রায় অশেষ এক করিডোর, বিছিয়ে রয়েছে। আমার হাতে রাইফেল, গুলির দমকে ক্রমাগত […]
একটা গোটা দেশকে খেয়ে উদরপূর্তি হলো। দেশ মানে তো কারুর মা, কারুর স্কুল, কারুর ঘরের পাশের রেলপথ, কারুর সংসার প্রতিপালন, কারুর চাষ-জমির মেরামতি। ওরা সবটা খেয়ে ফেলল। উদরপূর্তি হলো। সেই মেয়েটা, যে দেশ মানে […]
বড় দীর্ঘ এ উপাসনা, বেঁচে আছি আনত বিকেল ঢেকে গেছে কুয়াশায় ছড়ানো পালক কিছু ধূলো মেখে স্মৃতির আঁধারে পড়ে আছে মহামারী পার হই, শকটের বিলাপ চারিদিকে তুলে আনি শুকনো আঙুর, চোখের ভেতরে এক বন্ধ জানালা […]
তাঁত বুনে যাচ্ছি, রোদের শরীর থেকে উঠে আসে ছায়া। একটি রুয়েলিয়া ফুল ফুটে আছে দুরে- নির্নিমিখ অন্ধকারে। কোথা হতে ফিরে আসে ধ্বনি অনুপল জীবনের স্তন ছুঁয়ে! সময়ের প্রতিটি পলক মুহূর্তেই ডুবে যায় অনন্তের জলপুস্পে; ধুসর […]
নিরবিচ্ছিন্ন ভাঙচুরের এবরোখেবরো পেরিয়ে যেভাবে পাপড়িতে মুছে আসে অদৃশ্য কারণ ঠিক সেভাবেই কখনো আশ্রয় মিলে যায় শব্দের স্নেহে একাকী মুহূর্তরা জানে গানের ভেতর থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসা কান্নাদের আত্মীয় নেই…এই অবরোহে কবেকার প্রতিশ্রুতি প্রত্নতত্ত্ব হয়ে […]
(১) ক্রমশ আমার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠছো তুমি। খিদের মতো। মহীনের গান শুনে এমন একটা ভাবনাই চলাফেরা করে গোটা শরীরে। কুয়াশার মতো ছড়িয়ে পড়ে এদিক, ওদিক। ভয় পাই। এমন নয় যে আগুনের ইতিহাস আমি […]
আজকাল কথাহীন প্রেমে আমাদের সময় কাটে তুমি চুপচাপ আমার আঙ্গুল নিয়ে খেলো আমি দেখি তোমার নতুন আঁকা নেইল পলিশের স্নিগ্ধতা আর ভেঙ্গে যাওয়া নখের মুষড়ে পড়া কাতরতা। মাস্কের আড়ালে মুখের অভিব্যক্তি আড়ালে থাকে তাই চোখের […]
অই ঠোঁটে হারিয়েছি জাত, ধর্ম, বাস্তুভিটা চোখের ভেতর ডুব দিয়ে মুক্তো, মনিহার খুঁজে চলেছি চিবুকে হেঁয়ালি রোদের মতো পড়ে থাকতে বড় সাধ হয় আফ্রোদিতি কত মেঘ জমাবে বল? শুধু হৃদয়বৃত্তি আর অমরত্বের […]
নিঃসঙ্গ পথের বাঁকে মিলিয়ে যেতে দেখেছিলাম তোমার ছায়া পিছুটান কিছু ছিল না তাই অনুসরণ করেছিলাম উষ্ণ রাত, আছড়ে ফিরে আসা ঢেউ গীর্জার ধ্বনি পেরিয়ে এগিয়ে গেছি শুধু মুঠোর মধ্যে আঙুলগুলো নেওয়ার জন্য সম্বিত […]
আমি তলিয়ে যাচ্ছি একটি স্রোতহীন সমতল নদীর ভেতর কোনো আলোড়ন নেই নেই চতুর মাছেদের চোখ হয়তো আমি ঘুমিয়ে যাচ্ছি যে ঘুমটুকু তোলা ছিল দুঃসময়ের জন্য একটি কাঠের সিন্দুক থেকে বেরিয়ে আসে অনেক আগের পুরোনো ঠান্ডা […]
আসলে পথের কোনও শেষ নেই এই যে এতটা পথ পেরিয়ে এলে এখনও কী খুঁজে পেয়েছ ওম? আমরা সবাই দুয়েকটা বিড়িতে সুখটান দিতে দিতে নিভে যাই, অথবা ডালের বড়া ভাজতে ভাজতে লতিয়ে উঠি একান্ত অন্দরে আমাদের […]
এতটা পথের শেষে কেন এমন একটা নির্জনতা জেঁকে বসে? লোকালয়ে থেকে কেন একাকী এমন? এখন বেঁচে থাকার অর্থহীন কানাঘুষা শিথানের পাশে ফিসফিস করেই চলে নিরর্থক স্বরে। দিনলিপি লিখে রাখি- কতজনকে তো দেখি অচেনা মুখোশে। সময়ের […]
হাওয়ায় ভেসে আসা বুদবুদের সাথে আমরা বলতে থাকি শরীরের কথা। শরীর। শুধুই শরীর। মনহীন একটা কবন্ধের মত। আর দেখি হাওয়ায় দাগ কেটে উড়ে যাচ্ছে রুপোলী উড়োজাহাজ। সংহতির মেলার মাঠে আমি ননীলোভা চাঁদ পড়ে আসা পৃথিবীর […]
ট্রাফিকে আটকানো গাড়ির কাঁচে টোকা মেরে পয়সা চাওয়া বাচ্চা মেয়েটিকে যখন অগ্রাহ্য করেন আর বাড়ি ফিরে সাম্প্রতিক খবর শুনে দুশ্চিন্তা করেন ভবিষ্যৎ ভেবে, রাস্তায় পড়ে থাকা আহত রক্তাক্ত দেহ দেখে ব্যস্ততার নামে সেখান থেকে সরে […]
নিজের ছায়ায় ফাগুন দেখে হলুদে স্নান। বনাঞ্চলের শুকনো পাতায় বসন্ত মাখামাখি পাকদন্ডী ডিঙিয়ে শূন্যের উঁচুতে আরো উঁচুতে আঙ্গুল ছুঁতে চাইছে একটা হাসি—- মেঘের ডানায় সিপিয়া রঙ দুলছে, গোমেদরঙা হ্রদে বসন্ত জাগ্রত কবুতর উড়ে যাচ্ছে তিস্তাকে(সখা) […]
আমূল বিদ্ধ তীর বুকের নোঙর কম্পমান শব্দের ঢিল শাপলা-শালুক পাতার মতো ভাবনারা তিরতির বৃক্ষ নয় বিম্ব ছুঁয়েছে জলের শরীর পত্র-পল্লব ঝুঁকেছে প্রেমিক চুম্বন অধীর জীবন তুমি কী সেই জলাধার নও বৃক্ষ বেষ্টনীতে ঘিরে থাকা লাজুক […]
আমার অক্ষরগুচ্ছে আগুন জ্বালিও প্রেয়সীর প্রতি ছিল আর্তি গভীর পৃষ্ঠারা অসূর্যম্পশ্যা যেন থেকে যায় সুহৃদের প্রতি ছিল অনুরোধ # বিশ্বাসঘাত থেকে অমরত্বের কক্ষপথে স্থাপিত হয়েছে প্রতিভা মহাকালও নজরানা রাখে মুগ্ধতার নশ্বর আশরীর দৈব অবতার # […]
এখানে আপনি রোজ আসেন? সন্ন্যাসীর কথায় নর্তকী স্মিত হেসে ঝর্নার মতো কেশদাম মেলে দিয়ে সামনের চেয়ারে বসে পড়ে মধ্যরাতের এই পানশালায় এমন পুরুষ সে আগে দেখেনি একটু আগেও দ্রুতলয়ের গান বাজছিলো ধোঁয়ার চাদর ফুটো করে […]
মায়ের চোখ দুটো ছিলো এক আশ্চর্য বায়োস্কোপ- আলাদা এক সবুজ ও মাটির জগত ভেসে উঠতো ওই ঘোলা চোখে।আর তামাটে হাত দুটোতে ছিলো স্বপ্ন, মায়ার প্রেসক্রিপশন। আমাদের দীঘল উঠোনটা ছিলো মায়ের এক বিশ্বস্ত ভূ-গোল রাদারফোর্ডীয় এক […]
হাউই ওড়াতে ওড়াতে আগুন সখ্যে আঙুলে পড়েছে ফোস্কা অমায়িক জল-বালিশগুলো সময়ের ঘুড়ি হয়ে দিনে দিনে বোধহীন পাথুরে কর জোনাকির মোলায়েম স্পর্শে করতল দেয় না জানান আর অনুভূতির পূর্বাপর জমিনে সরিষা ফুল বুকে ফুটে থাকে রোদ […]
—– অথচ চোখের ভেতর এক আস্ত নদী; সাঁতরে পারাপার হতে পারিনি কখনো উজানের দিকে তাকালে পলক পড়ে না আবার বেজুবান ভাটির দিকে তাকালে টনটন করে বুকটা… তুমিও তো এমনি নদীই ছিলে—- এখন মনে হয় অনন্ত […]
মনে করো, তুমি তো কোনো মেয়ের মতোই কোমল, মনে করো, তুমি গর্ভ দিতে দিতে অজান্তেই নিশিভাঙা পৃথিবীকে উপহার দিয়েছ কালসর্প খোলস। আর প্রত্যেক বিষ্যুদবারে সেখান থেকে জন্ম নিচ্ছে অলক্ষ্মী আলো। মনে করো, তোমার বয়স পাঁচ […]
অনেকগুলো ঠোঁট একসাথে বেঁধে বেঁধে রেখেছে নিজেদের তারা আর জন্ম নেয়নি মানুষের দেহে জুড়ে যাবে বলে বরং মানুষেরাই কত সহজে জুড়ে যাচ্ছে ঠোঁটেদের একাকীত্বে এখনো এরকম প্রতিটা ঠোঁট ছুঁয়ে বারান্দার কার্নিশে ঝুঁকে দাঁড়াতে পারছি আমরা […]
বেশ খানিকটা দিন পেরিয়ে এলাম । পঞ্চান্ন বছর পাঁচ মাস সাড়ে সতের দিন জুড়ে শুধুই আলো আর আলো , বসতবাড়িতে সূর্য পাত পেড়ে খেতো রোজ । চাঁদ আসতো তার রুচিমতো । দিন রাত্রির ফারাক ছিলো […]
বিশুদ্ধ হাওয়ার বড় অভাব আজকাল, ওহে হাওয়া কারিগর! পাঁজরের অস্থিতে বসে থাকা তিপ্পান্নটি অন্ধ বালক ঝড়ের মত ফিসফাস করে ‘দুই হাজার নয়শ বিরাশি দিন, দুই হাজার নয়শ বিরাশি রাত….. আজকাল কেবিনবদ্ধ লোকজন থিক থিকে অন্ধকারে […]
এক একটা অক্ষর নয় কালো মেঘ নেমে আসে অমাবস্যা খাতায় রাতের নিম ফুল কার অপেক্ষা করে এখন যে বৃদ্ধ বয়েস। তুতেন খামানের পিরামিড এর মতো মৃত শরীর ঐশ্বর্য নিয়ে পড়ে থাকে। শুনেছি কাল রাতে চাঁদ […]
তুমি কি ফাগুনের মোহনীয় রঙ ছিলে? নাকি সব লণ্ডভণ্ড করা মাতাল বাতাস! তুমি কি ডুব দেয়ার মত মানসসরোবর ছিলে? নাকি চোরাবালি! নিমজ্জনের কালে ধার চেয়েছিলাম বুকভরা স্বাস্থ্যকর নিঃশ্বাস আর রাতভর উর্বর ঘুম দিয়েছিলে তুমি অর্থহীন […]
বারবনিতাদের মিছিল শহরের অলিগলি ঘুরে, জমায়েত হয়েছে চার রাস্তার মাথায়। উৎসুক উলঙ্গ শিশুদের দল কিছুক্ষণ ঘিরে ছিলো জমায়েত, ওখানে কোন পুরুষ দর্শনার্থী ছিলো না। কিছুটা আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখলাম, আশপাশের চা’য়ের দোকান, ঝটপট ক্রেতাশূণ্য হয়ে গেল, […]
কিছু সুর এনেছি, কিছু অকূলের গল্প যদি শুনতে চাও, ডানা মুড়ে বস তারপর একদিন আমরাও অকূলে ভাসব নৌকা, জাহাজ, ডানা কিছুরই প্রয়োজন নেই শুধু একটা খাঁচা আছে, বন্দী জীবন আর একটা উড়তে চাওয়া মন।
রাতের গল্পগুলো কল্পকথার মতো জেগে থাকে যদিও রূপকথা শুনে এখন আর আগের মতো শিহরিত হই না। কৃষ্ণপক্ষীয় চাঁদের আলো বর্ধমানে হোটেল লবিতে জেগে, দক্ষিণেশ্বর সাধারণ মেয়েটা ভাবছে ইতিউতি উঁকি দেয় অপ্রত্যাশিত কিছু ভেজা মেঘের ভাবনা। […]
মহাযুদ্ধের অপেক্ষায় সময় কাটে আমার- কেননা এই নগরী বড্ড পুরানো হয়ে গেছে প্রাচীন প্রাচীরের গায়ে জমে ওঠা শ্যাওলা সাপের মত শুয়ে থাকা কালচে-ধূসর রাস্তা রাস্তার একপাশে খোবলানো গর্ত গর্তের চারপাশে জমে থাকা কাগজ, রাবারের জন্মনিরোধক, […]
Site By-AstuteHorse